পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাণতত্ত্ব
১৪১

সুতরাং গন্ধটা যে পদার্থের সূক্ষ্ম কণা দ্বারা উৎপন্ন হয়, এই পরীক্ষাটির দ্বারাও তাহা আমরা বেশ বুঝিতে পারি। ডাক্তার এট্‌কিন্ কর্পূর, ন্যাপ্‌থালিন, আতর ইত্যাদি নানা ভালমন্দ গন্ধদ্রব্যের উপর পূর্ব্ববর্ণিত পরীক্ষা করিয়া, সকল পরীক্ষাতে একই ফল পাইয়াছেন। কাজেই প্রাণতত্ত্বের মূল ব্যাপারে যে পুরাতন বিশ্বাস ছিল, তাহা আজকাল ক্রমেই শিথিল হইয়া দাঁড়াইতেছে। গন্ধপ্রদ দ্রব্য হইতে গন্ধটা তরল বা কঠিন আকারে আসিয়া নাসিকায় প্রবিষ্ট হইলে, পরীক্ষায় তাহা ধরা পড়িত। সুতরাং দ্রব্যের বাষ্পীয় অবস্থাতেই যে গন্ধ উৎপন্ন হয়, একথা অস্বীকার করিবার আর উপায় নাই।

 নানা আবর্জ্জনাপূর্ণ ড্রেন্ বড় বড় সহর মাত্রেরই নানা অংশে বিস্তৃত থাকে। এই সকল পয়ঃপ্রণালী দ্বারা কি প্রকারে সহরের স্বাস্থ্য নষ্ট হয়, তাহা কিছুদিন পূর্ব্বে কয়েকজন ইংরাজ স্বাস্থ্য-রক্ষক আলোচনা করিয়াছিলেন। স্থির হইয়াছিল, পয়ঃপ্রণালী হইতে উদ্গত দুষ্ট বাষ্প স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর এবং বিশেষ ক্ষতিকর ড্রেনের গন্ধ। গলিত আবর্জ্জনার কণাসকল গন্ধের আকারে আমাদের দেহে প্রবেশলাভ করে, এবং নানা ব্যাধির জীবাণু সঙ্গে সঙ্গে বহিয়া আনিয়া অধিবাসিগণকে ব্যাধিগ্রস্ত করিয়া ফেলে। বলা বাহুল্য, গন্ধোৎপত্তির পুরাতন সিদ্ধান্তে বিশ্বাস করিয়া, স্বাস্থ্যরক্ষকগণ পূর্ব্বোক্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছিলেন। কিন্তু গন্ধ যে, কেবল বায়বীয় পদার্থময়, ডাক্তার এট্‌কিনের পরীক্ষায় তাহা অভ্রান্তরূপে প্রমাণিত হইয়া গিয়াছে। সুতরাং নানা ভয়াবহ পীড়ার বাহক বলিয়া স্বাস্থ্যতত্ত্ববিদ্‌গণ ড্রেনের গন্ধের উপর যে অযথা দোষারোপ করিয়াছিলেন, এই নবাবিষ্কারে নিশ্চয়ই তাহার ক্ষালন হইবে বলিয়া আশা হয়। এখন ব্যাধি-জীবাণুর সংক্রমণের কারণান্তর অনুসন্ধানের সময় আসিয়াছে।

 ঘ্রাণতত্ত্ব-সম্বন্ধীয় এই নূতন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অদ্যাপি কোনও