পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪০
প্রাকৃতিকী

থাকিবে। বড় বড় সহরে প্রাতে ও সন্ধ্যায় যে একপ্রকার কুয়াশা দেখা যায়, তাহা বাতাসে উড্ডীয়মান সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম ধূলিকণা ও ধোঁয়ার কণারই কাজ বলিয়া স্থির হইয়াছে। সহরের বায়ুতে ধূলিকণা অত্যন্ত অধিক পরিমাণে মিশানো থাকে। কাজেই ঐ সকল স্থানের জলীয় বাষ্প ঐ কণাগুলির চারিপাশে জমাট বাঁধিয়া কুয়াশার উৎপত্তি করে।

 বায়বীয় পদার্থের মধ্যস্থিত কঠিন জড়কণার এই কার্য্যটির সাহায্যে এট্‌কিন সাহেব তাঁহার নূতন সিদ্ধান্তটির সার্থকতা দেখাইয়াছেন। ইনি দুইটি পরিচ্ছন্ন কাচপাত্র লইয়া, উভয়েই প্রথমে ধূলি বা অপর কোনও জড়কণা বর্জ্জিত জলীয় বাষ্প রাখিয়াছিলেন, এবং পরে একটি পাত্রে কিছু মৃগনাভি ফেলিয়া দিয়াছিলেন। বলা বাহুল্য, গন্ধটা যদি সত্যই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণার আকারে মৃগনাভি হইতে বাহির হইত, তবে ঐ সকল কণাকে অবলম্বন করিয়া পাত্রটির জলীয় বাষ্প নিশ্চয়ই জমাট হইয়া পড়িত। কিন্তু পরীক্ষায় তাহা দেখা যায় নাই। মৃগনাভির গন্ধপূর্ণ পাত্রটি, অপর পাত্রের ন্যায় স্বচ্ছই রহিয়া গিয়াছিল। কাজেই মৃগনাভির অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ কঠিনাকারে থাকিয়া চারিদিকে ছড়াইয়া পড়িলে গন্ধের উৎপত্তি হয় বলিয়া যে বিশ্বাস ছিল, তাহার অমূলকতা এই সহজ পরীক্ষায় বেশ বুঝা গিয়াছিল।

 কাচের নলের মধ্যে পরিষ্কার তূলা রাখিয়া, সাধারণ অপরিষ্কৃত বায়ুকে সেই নলের ভিতর দিয়া চালাইতে থাকিলে, বায়ু পরিষ্কৃত হইয়া নল হইতে বাহির হয়। কারণ এখানে বায়ুমিশ্রিত ধূলিকণাদি তূলায় বাধা পাইয়া আটকাইয়া যায়। এই প্রক্রিয়াটি বায়ুশোধন করিবার একটি সুন্দর উপায়। এট্‌কিন্ সাহেব মৃগনাভি ইত্যাদি দ্বারা গন্ধযুক্ত বায়ুকে কাচনলের ভিতর দিয়া চালাইয়া শোধন করিয়া লইয়াছিলেন। পদার্থের সূক্ষ্ম কণা দ্বারা গন্ধের উৎপত্তি হইলে, শোধিত বায়ুতে গন্ধের লেশমাত্র থাকিত না। কিন্তু প্রত্যক্ষ পরীক্ষায় তাহা দেখা যায় নাই।