পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রাণী ও উদ্ভিদের বিষ
১৫১

খাওয়াইলে নানাপ্রকার পীড়ার লক্ষণ দেখা দেয়। ইহা দেখিয়া ল্যাঙ্কেষ্টার্ সাহেব বলিতেছেন,—মৎস্য-মাংসাহারে এই অসুস্থতার লক্ষণ বিষেরই পরিচায়ক। বিষ খাইলেই সকলে অসুস্থ হয় না, এমন বিষ অনেক আছে, যাহা একজনের শরীরে যে ফল দেখায় অপরে তাহা দেখায় না। একই খাদ্য আহার করিয়া এবং একই জল পান করিয়া এক ব্যক্তি পীড়িত হইল এবং অপর ব্যক্তি খাদ্যস্থ বিষ হজম করিয়া সুস্থ থাকিল, এ প্রকার ঘটনা প্রায়ই দেখা যায়। এই সকল কথা মনে করিয়া ল্যাঙ্কেষ্টার সাহেব বলিতেছেন, নিরামিষাহারিগণ মৎস্য মাংস খাইলেই যে অসুস্থতা বোধ করেন, তাঁহাদের এই অসুস্থতার কারণ মৎস্য-মাংসের বিষ ব্যতীত আর কিছুই নয়। এমন অনেক লোক দেখিতে পাওয়া যায়, যাঁহারা যথেষ্ট মাংস আহার করিতে পারেন, কিন্তু মৎস্য ভক্ষণ করিতে পারেন না। চিংড়ি মৎস্য বা কাঁকড়া খাইলেই অসুস্থ হইয়া পড়েন, এ প্রকারও অনেক লোক দেখা গিয়াছে। রন্ধন করিলেও মৎস্য মাংসে মৃদু বিষ থাকিয়া যায়, ইহা স্বীকার করিয়া লইয়া ল্যাঙ্কেষ্টার্ সাহেব নিরামিষাহারীর রুচি অরুচির ব্যাখ্যান দিবার চেষ্টা করিয়াছেন।

 বড়ই আশ্চর্য্যের বিষয়, সাপ প্রভৃতির যে তীব্র বিষের বিন্দুমাত্র রক্ত স্পর্শ করিলে বৃহৎ প্রাণীরও মৃত্যু হয়, তাহা উহাদের নিজের দেহে প্রবেশলাভ করিলে কোনই অনিষ্ট করিতে পারে না। একটি সর্প আর একটিকে দংশন করিলে আহত সর্পের যে, কোন অনিষ্টই হয় না, তাহা একাধিক পরীক্ষায় সুস্পষ্ট দেখা গিয়াছে। কয়েক জাতীয় সর্পকে রাগাইলে তাহারা নিজেদের গায়ে নিজেরাই কামড় দিতে থাকে, কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয়, নিজের বিষে ইহাদের কেহই নিজে মরে না। সম্প্রতি এই ব্যাপার লইয়া জীবতত্ত্ববিদ্‌গণ নানা গবেষণা করিয়াছেন। ইহার ফলে স্থির হইয়াছে যে, বসন্তের বা ডিপ্‌থেরিয়া প্রভৃতি রোগের বীজ অল্পমাত্রায় দেহস্থ করিলে যেমন এই সকল রোগের তাজা বিষ