পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫০
প্রাকৃতিকী

 প্রাণীদের মধ্যে পতঙ্গ জাতির দেহে যত বিষ দেখা যায়, বোধ হয় অপর কোন জাতির মধ্যে সে প্রকার দেখা যায় না। মৌমাছি, বোলতা, ভীমরুল, পিপীলিকা সকলেই বিষাক্ত এবং ইহাদের সকলেরই বিষ পুচ্ছদেশে রক্ষিত দেখা যায়। কেবল সুঁয়ো পোকা ও মশক তাহীদের বিষ পুচ্ছে রাখে না। সুঁয়ো পোকার বিষ তাদের চুলে এবং মশকের বিষ তাহাদের মুখে থাকে। মাকড়সা-জাতীয় পতঙ্গ তাহাদের পায়ের নখে রাখে। নখের মূলেই ইহাদের বিষ-স্থালী। আমাদের তেঁতুলে-বিছের বিষ তাহাদের দাঁতে থাকে, দন্তমূলে যে বিষস্থালী থাকে তাহা হইতে ইচ্ছামত বিষ নির্গত করিয়া শত্রুকে দংশন করিতে পারে। পতঙ্গের সংখ্যা যেমন অধিক, ইহাদের শত্রুও তেমন অনেক। অনেক পক্ষীর পতঙ্গই প্রধান আহার। তা ছাড়া টিক্‌টিকি, গিরগিটি, এমন কি আমাদের সেই অতি নিরীহ ভেকগুলি সম্মুখে পতঙ্গ পাইলে, সিংহের মত তাহাদিগকে আক্রমণ করে। এই সকল শত্রুর কবল হইতে রক্ষা পাইবার জন্য পতঙ্গের গায়ে, মুখে, লেজে, দাঁতে, নখে, বিষ রাখিতে হইয়াছে।

 বড় আশ্চর্য্যের বিষয় আমাদের কাঁক্‌ড়াগুলির বড় বড় দাঁড়া আছে, কিন্তু তাহাতে বিষ নাই। চিংড়িমাছেরও সেই দশা। খুব লম্বা লম্বা দাঁড়া আছে, কিন্তু সেগুলি একবারে নির্বিষ। পক্ষীদের পায়ের নখ ও ঠোঁট খুব ধারালো, কিন্তু সেগুলিতেও বিষের চিহ্ন দেখা যায় নাই।

 যে-সকল প্রাণীর দেহে কোন প্রকার বিষযুক্ত অঙ্গ নাই, তাহাদের মধ্যে অন্ততঃ কতকগুলির মাংসে বিষের লক্ষণ ধরা পড়িয়াছে। ইংলণ্ডের সুপ্রসিদ্ধ চিন্তশীল বৈজ্ঞানিক ল্যাঙ্কেষ্টার্ সাহেব (Sir Ray Lankester) হিসাব করিয়া দেখিয়াছেন, অন্ততঃ শতকরা দশজন লোক ইচ্ছা করিলেও মৎস্য মাংস আহার করিতে পারে না; জোর করিয়া