পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৪
প্রাকৃতিকী

দধি, দুগ্ধ, ঘৃত, মধু ও চিনি সকলই কলিকালে অমৃত। অতএব সুখাদ্যমাত্রকেই যদি অমৃত বলা যায়, তাহা হইলে ভুলের মাত্রা খুবই কমিয়া আসে।

 শুনিয়াছি অন্ততঃ কিছুদিন পূর্ব্বে আমাদের পাহাড়-পর্ব্বতের নিভৃত স্থানে এমন সাধু-সন্ন্যাসী প্রায়ই দেখা যাইত, যাঁহারা মহাদেবের ন্যায় বিষ খাইয়া হজম করিয়া ফেলিতেন; ইঁহাদের খাদ্যাখাদ্যের বিচার ছিল না, গরল ও অমৃত ইঁহাদের হিসাবে একই শ্রেণীর খাদ্যের মধ্যে পড়িত। এই সন্ন্যাসি-সম্প্রদায়ের আর দেখা পাওয়া যায় না। কিন্তু এই কলিকালে ঠিক্ ঐ প্রকার আর এক দল লোক দেখা দিয়াছে, যাঁহারা অমৃত ও গরলকে একই কোটায় ফেলিতে চাহিতেছেন। ইঁহারা সন্ন্যাসী নহেন, সম্পূর্ণ গৃহী, আমাদেরি মত আহার বিহার কাজকর্ম্ম করিয়া বেড়ান। ইঁহারাই আমাদের আধুনিক বৈজ্ঞানিক। ইঁহাদের সকলেই একবাক্যে বলিতেছেন, অমৃত ও গরল জিনিষ হিসাবে একই কোটায় পড়ে। আমাদের সন্ন্যাসি-সম্প্রদায়ের ন্যায় ইঁহারা গরল ভক্ষণ করিয়া হজম করিতেছেন না বটে, কিন্তু হাতে কলমে এমন প্রমাণ প্রয়োগ করিতেছেন যে, অমৃত ও গরল একই পদার্থ নয়, একথা এখন আর বলা চলিতেছে না।

 বিষয়টা একটু খোলসা করিয়া বলা যাউক। বিজ্ঞ পাঠক অবশ্যই জানেন, আমরা এই যে খাদ্য-অখাদ্য নানা জিনিষ চারিদিকে দেখিতেছি, কতকগুলি ছাড়া তাহাদের প্রায় প্রত্যেকটিই দুই, তিন, চার বা তাহার অধিক মূল-পদার্থের যোগে উৎপন্ন। আমরা যে জিনিষটার সহিত খুব পরিচিত সেই জলকে লইয়া দেখি। পরীক্ষাশালায় জলকে ভাঙ্গিয়া বৈজ্ঞানিক দুইটি বায়বীয় পদার্থ অক্সিজেন্ ও হাইড্রোজেনের উৎপত্তি দেখাইয়া দিবেন। অক্সিজেন্ ও হাইড্রোজেন্ এই দুইটি বায়ু মূলপদার্থ, ইহাদিগকে কোনক্রমে বিশ্লেষ করা যায় না, অর্থাৎ ভাঙ্গিয়া নূতন কোন