পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৬
প্রাকৃতিকী

পদার্থেরই মিলনে সহস্র সহস্র বিচিত্র জিনিষের উৎপত্তির কথাটা শুনিলে যেন মনে খট্‌কা লাগে। ব্যাপারটা দাঁড়ায় যেন এই প্রকার,—ছানা ও চিনি লইয়া ময়রার দল ভিয়ানে বসিয়া গিয়াছে, ঐ দুই অপূর্ব্ব পদার্থের যোগে যেন এক খোলায় হইল খাসাগোল্লা, এক খোলায় হইল পাঁপর ভাজা, এক খোলায় হইল ঢাকার পরেটা, এক খোলায় হইল মাগুর মাছের ঝোল এবং শেষের খোলায় হইল পদ্মগন্ধ কুন্তলীন তৈল। এপ্রকার অদ্ভুত ব্যাপার ত আমরা এ জগতে দেখিতে পাই না। পাণ, চূণ, খয়ের ও মসলার যোগে সুস্বাদু পাণের খিলিই প্রস্তুত হয়, এগুলির মিলনে কোনদিন জগন্নাথ দেবের প্রসাদ, ক্ষীরের লাড়ু বা অপর কিছু প্রস্তুত হইল, এমন ত কোন দিন দেখা যায় নাই এবং শুনাও যায় নাই।

 কয়েকটি মাত্র পদার্থের যোগে সৃষ্টির প্রত্যেক বিচিত্র জৈব পদার্থের উৎপত্তির অসম্ভবতার কথা তুলিলে বৈজ্ঞানিকগণ নীরব থাকেন না। তাঁহারা বলেন,—ঐযে ময়রার ভিয়ানের উদাহরণ দিলে, তাহার সহিত বৈজ্ঞানিকের ভিয়ানের মিল নাই। ময়রা ঘৃত, চিনি, ও সুজি ভাগে ভাগে লইয়া মোহনভোগ প্রস্তুত করে। জিনিষটা খুবই উপাদেয় হয় সন্দেহ নাই, কিন্তু মোহনভোগে ঘৃত ঘৃতই থাকে, চিনি চিনিই থাকে এবং সুজি সুজিই থাকে। এই তিন জিনিষের একটা উপর-উপর মিশ্রণে মোহনভোগের উৎপত্তি হয়। কিন্তু বৈজ্ঞানিক যখন দুই পরমাণু হাইড্রোজেন্ এবং এক পরমাণু অক্সিজেন্ লইয়া ভিয়ানে বসেন, তখন এই দুই পদার্থের যোগে এমন একটা জিনিষ হয়, যার সঙ্গে অক্সিজেন্ বা হাইড্রোজেন কাহারো মিল থাকে না। বৈজ্ঞানিক-ভিয়ানের রকমই এই প্রকার। যে-সকল মাল-মসলায় দ্রব্য প্রস্তুত হয়, তাহাদের সহিত দ্রব্যের মিল থাকে না; না আকারে, না গুণে। তার পর আবার পরিমাণ লইয়া কথা-বার্ত্তা আছে। এক সের ছানার সহিত