পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অমৃত ও গরল
১৫৭

আধ সের চিনি মিশাইয়া গোল্লা প্রস্তুত করিলে, বেশ ভাল গোল্লাই হয়। কিন্তু সেই এক সের ছানার সহিত এক সের চিনি মিশাইলে, তাহা কখনই গুড়ে মণ্ডায় পরিণত হয় না,—গোল্লাই হয়, না হয় জিনিষটা একটু শক্ত হয়, মিষ্ট একটু বেশি হয়। কিন্তু বৈজ্ঞানিকের ভিয়ানে, মাল-মসলার ওজনের একটু কম বেশিতে সম্পূর্ণ পৃথক পৃথক জিনিধ প্রস্তুত হইয়া পড়ে।

 মনে করা যাউক, দুইটি হাইড্রোজেনের পরমাণু ও একটি অক্সিজেনের পরমাণু লইয়া বৈজ্ঞানিক কোন পদার্থ প্রস্তুত করিতে বসিলেন। এগুলির মিশ্রণে অণুপ্রমাণ জল উৎপন্ন হইয়া পড়িল। কিন্তু ঐ দুই পরমাণু হাইড্রোজেনের সহিত এক পরমাণু অক্সিজেন না মিশাইয়া যদি দুই পরমাণু অক্সিজেন মিশানো যায়, তাহা হইলে আর জল প্রস্তুত হয় না। এমন একটা জিনিষ হয়, যাহার সহিত জলের অতি দূর সম্বন্ধও কল্পনা করিতে পারা যায় না। মূলপদার্থের এই প্রকার বিচিত্র মিলনে নূতন নূতন দ্রব্য প্রস্তুত হইতে দেখিয়া বৈজ্ঞানিকগণ বলিতেছেন, জৈব পদার্থমাত্রেরই মালমসলা একই বটে, কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণে সেগুলি মিশে বলিয়া আমরা তাহাদের মধ্যে এত বৈচিত্র্য দেখিতে পাই। কেবল জৈব নয়, জড়সৃষ্টির বৈচিত্র্যেরও উহাই কারণ। তবে অজৈব জিনিষ কি কি উপাদানে প্রস্তুত তাহা নির্ণয় করিয়া আবার সেই সকল উপাদানকে একত্র করিয়া আমরা সেটিকে যেমন পরীক্ষাগারে প্রস্তুত করিতে পারি, জৈব জিনিষকে তাহা পারি না। এগুলিকে আমরা ভাঙ্গিতে পারি; কোন্ কোন্ মূল উপাদান তাহার ভিতর আছে তাহা নির্ণয় করিয়া নিক্তির ওজনে সেগুলিকে মাপিতেও পারি, কিন্তু যখন ঠিক সেই ওজনের মালমসলা সংগ্রহ করিয়া বিজ্ঞানাগারের খোলায় ভিয়ান আরম্ভ করি, তখন যে জৈব জিনিষের উৎপত্তির আশা করিতেছিলাম তাহা জন্মায় না। তাহা