পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অমৃত ও গরল
১৫৯

যায় না। কাজেই বলা যাইতেছে না যে, ইঁহারা সৃষ্টির কৌশল আয়ত্ত করিয়া ফেলিয়াছেন।

 যাহা হউক, অমৃত ও গরলের কথা উপস্থিত করিয়া অনেক দূরে আসা গিয়াছে, আবার অমৃত ও গরলে ফিরিয়া যাওয়া যাক্। অমৃতের অনেক কথা পূর্ব্বে বলা হইয়াছে এখন গরল জিনিষটাকে বৈজ্ঞানিকগণ কি বলেন, আলোচনা করা যাউক। ইঁহারা অধিকাংশ জৈব গরল অর্থাৎ যেমন সাপের বিষ, একোনাইট্, আফিং ইত্যাদিকে পরীক্ষাগারে বিশ্লেষ করিয়া ঘৃত, দুগ্ধ, মাখন ও মিষ্টান্নাদির সকল উপাদানগুলিই বিষে দেখিতে পাইয়াছেন। কেবল ইহাই নয়, খুব ভাল পুষ্টিকর সুখাদ্যে উপাদানগুলি যে পরিমাণে মিশানো থাকে, অনেক বিষপদার্থে উপাদানগুলিকে অবিকল সেই পরিমাণেই মিশ্রিত দেখা যাইতেছে। খুব উৎকৃষ্ট দধিতে যে পরিমাণে হাইড্রোজেন্, অক্সিজেন্, নাইট্রোজেন্ ও অঙ্গারাদি মিশ্রিত থাকে, হয় ত গোথুরা সাপের তাজা বিষে ঐসকল মূলপদার্থই ঠিক্ সেই পরিমাণেই মিশ্রিত দেখা যায়। এখন পাঠক বুঝিবেন, কেন আমাদের বৈজ্ঞানিকেরা অমৃত ও গরলকে বিজ্ঞানের দিক্ দিয়া একই কোটায় ফেলিতে চাহেন।

 যাহা হউক, অমৃত ও বিষের উপাদান যেন একই হইল, এবং উপাদানগুলির ওজনও যেন একই দেখা গেল;—এখন একই পরিমাণে, মিশিয়া কেন একটিকে বিষ এবং অপরটিকে অমৃতের গুণ দেয় দেখা যাউক; জীবজগতের লীলার রহস্য এক লীগাময় পরমেশ্বরের জানা আছে, সেই লীলার মূলে মানুষের প্রবেশাধিকার নাই, এই আংশিক সত্য কথাটা বলিলেই “কেন”র উত্তর পাওয়া যায়। এপর্য্যন্ত মানুষ ঐপ্রকার উত্তর দিয়াই মনকে শান্ত রাখিয়া আসিতেছিল। আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণ এই উত্তরে সন্তুষ্ট হইবার পাত্র নহেন। ইঁহারা দেখিতে চাহেন কেবল প্রকৃতির সহজ ও সুস্পষ্ট নিয়মের ধারা