পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রকৃতির বর্ণ-বৈচিত্র্য

আকাশের নীলিমা, বৃক্ষলতাতৃণের শ্যামলতা, পশুপক্ষীর দেহের বিচিত্র বর্ণ, সব মিলিত হইয়া জগতে দিনের পর দিন যে এক রঙের খেলা দেখাইতেছে, তাহা না থাকিলে বোধ হয় পৃথিবীর অর্ধেক আনন্দ কমিয়া যাইত।

 মনে করা যাক, জলস্থল আকাশ, সজীব-নির্জীব, তরুগুল্ম, সকল বস্তুই যেন বরফের ন্যায় শ্বেত বা সমুদ্রের ন্যায় নীল হইয়া দাঁড়াইয়াছে। এই একঘেয়ে রঙ্ আমাদের চক্ষুকে যে কত পীড়া দিত তাহা অনুমান করা কঠিন নয়। ফোটোগ্রাফের এক-রঙা ছবি প্রকৃতিকে নিখুঁত করিয়া আঁকে এবং নিপুণ চিত্রকর সেই প্রকৃতিকেই কল্পনার চক্ষে দেখিয়া রঙিন করিয়া নকল করে,—কিন্তু দর্শক আসলের চেয়ে নকলকেই আদর করে অধিক। বলা বাহুল্য ইহাকে দর্শকের বিচারমূঢ়তা বলা যায় না; আমাদের চক্ষু যে বর্ণের লীলা দেখিবার জন্য লালায়িত, তাহা এক-রঙা ফোটোগ্রাফে নাই, তাই ফোটোগ্রাফের এত অনাদর।

 এখন প্রশ্ন হইতেছে, রঙের খেলা দেখাইবার জন্য প্রকৃতি ঋতুসম্বৎসর ধরিয়া বৃক্ষের বীজে ও প্রাণীর কোষে যে আয়োজন করেন, তাহার উদ্দেশ্য কি? জগৎকে সুন্দর ও মধুর করিবার জন্য প্রকৃতিতে যে শত শত আয়োজন আছে, ইহা তাহাদেরি মধ্যে একটি বলিলে প্রশ্নের মীমাংসা হইয়া যায়। কিন্তু বৈজ্ঞানিকগণ এ প্রকার ব্যাখ্যা দিয়া তৃপ্ত হন না। প্রাণিদেহে এত জটিল-যন্ত্রের সমাবেশ কেন? এই প্রশ্নের