পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৪
প্রাকৃতিকী

উত্তরে যদি কেহ বলেন, প্রাণীকে জীবিত এবং সুস্থ রাখিবার জন্যই দেহে এত ইন্দ্রিয় ও যন্ত্রাদি স্থান পাইয়াছে, তাহা হইলে উত্তরটা বৈজ্ঞানিকোচিত হয় না; কোন্ শারীর-যন্ত্র জীবনে কোন্ ক্রিয়া করিতেছে, তাহা দেখানোই বৈজ্ঞানিকের কাজ। এইজন্য জগৎকে বিচিত্র বর্ণে রঞ্জিত করিয়া প্রকৃতি সৃষ্টিরক্ষার কি সহায়তা করিতেছে তাহা নির্ণয় করিবার উদ্দেশ্যে বৈজ্ঞানিকগণ কিছুদিন ধরিয়া গবেষণা করিতেছেন। ইহাতে যথেষ্ট সুফল লাভ করা গিয়াছে সত্য; কিন্তু সকল প্রহেলিকার মীমাংসা হয় নাই।

 যে-সকল মহাপণ্ডিত আজীবন আলোক ও বর্ণতত্ত্ব লইয়াই কাটাইয়াছেন, বর্ণ-বৈচিত্র্যের রহস্য জানিবার জন্য প্রশ্ন করিলে তাঁহারা সদুত্তর দিতে পারেন না। ইঁহারা বলেন, এই যে শুভ্র সূর্য্যালোক দেখিতেছ, উহা এক-রঙা আলো নয়; লাল হইতে আরম্ভ করিয়া বেগুনে পর্য্যন্ত অনেক মূল বর্ণরশ্মি মিলিয়া এই শ্বেতরশ্মি উৎপন্ন হইয়াছে। তে-শিরা কাচের উপর সূর্য্যের সাদা আলো ফেলিলে, ইহার সেই মৌলিক রঙিন বর্ণরশ্মিগুলা প্রত্যক্ষ দেখা যায়। যে জিনিষটা লাল, তাহার বিশেষ গুণ হইতেছে এই যে, শুভ্র সূর্য্যালোককে বিশ্লেষ করিয়া তাহার মধ্য হইতে কেবল লাল আলোকটিকে প্রতিফলিত করা এবং অবশিষ্ট রশ্মিকে ভিতরে প্রবেশ করাইয়া লোপ করা। কাজেই প্রতিফলিত লাল রশ্মিতে আমরা দ্রব্যটিকে লাল দেখি। যে বস্তু নীল সেটিও ঠিক এই প্রকারে শুভ্র সূর্যরশ্মির নীল আলোকটিকে প্রতিফলিত করিয়া অপরগুলিকে হরণ করিয়া ফেলে।

 বর্ণোৎপত্তির এই বৈজ্ঞানিক সিন্ধান্তে লাল নীল প্রভৃতি বর্গের উৎপত্তির কথা বুঝা যায় বটে, কিন্তু গোলাপের গঠনোপাদানের কোন্ বৈচিত্র্যে একটি গোলাপকে আমরা লাল এবং আর একটিকে সাদা দেখি তাহার তত্ত্ব আলোকবিদের নিকট হইতে পাওয়া যায় না। তা’ ছাড়া