পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
প্রাকৃতিকী

হইতেছে, তাহা ভুল। ইলেক্ট্রনের আবিষ্কার প্রচলিত রাসায়নিক সিদ্ধান্তকে খুবই বিচলিত করিয়া দিয়াছিল।

 এই প্রকার একটা প্রকাণ্ড ব্যাপারকে সম্মুখে রাখিয়া বৈজ্ঞানিকগণ আর নিশ্চেষ্ট হইয়া থাকিতে পারেন নাই। নূতন গবেষণার শত দ্বার মুক্ত হইয়া পড়িয়াছিল। ইংলণ্ড, ফ্রান্স ও জর্ম্মানী প্রভৃতি সকল দেশেরই বড় বড় বৈজ্ঞানিক মনে করিতে লাগিলেন, সত্তর বা আশীটি মূলপদার্থ নাই; বোধ হয়, এক মূলপদার্থে সমগ্র বিশ্বের রচনা হইয়াছে এবং তাহা সেই ইলেক্ট্রন্।

 ক্রুক্‌স্‌ সাহেবও নিশ্চেষ্ট হইয়া বসিয়া ছিলেন না। সকল পদার্থের গোড়ায় একটা মাত্র মূলপদার্থেরই অস্তিত্ব থাকা সম্ভব বলিয়া ইহার মনে হইয়াছিল। এই কাল্পনিক জিনিষটাকে “Protyle” নামে আখ্যাত করিয়া, ইনি তাঁহার নির্জ্জন বীক্ষণাগারে বসিয়া বিশ্বরচনার স্বপ্ন দেখিতে লাগিলেন। ইহাই মনে হইতে লাগিল, তাঁহার আবিষ্কৃত সেই সূক্ষ্ম কণাগুলি যেন কোন এক অজ্ঞাত শক্তিতে একত্র হইয়া হাইড্রোজেনের পরমাণুর রচনা করিতেছে। তাহাদেরই সহিত আবার কতকগুলি নূতন কণিকা অল্পাধিক পরিমাণে মিলিয়া গন্ধক, আর্সেনিক্, লৌহ, তামাদির সৃষ্টি করিতেছে এবং সমবেত কণিকার সমষ্টি অত্যন্ত অধিক হইয়া দাঁড়াইলে ইউরেনিয়ম্ প্রভৃতি গুরু ধাতুর সৃষ্টি চলিতেছে। স্বপ্নের শেষে দেখিতে পাইলেন, সেই বিদ্যুদ্বাহক কণিকা লঘুগুরু পদার্থের জন্ম দিয়াই ক্ষান্ত হইতেছে না, গুরু ধাতু হইতে তাহারা গোলা-গুলির মত ছুটিয়া বাহির হইয়া তাহাকে লঘুতর পৃথক্ পদার্থে পরিণত করিতেছে।

 পঁচিশ বৎসর পূর্ব্বে অধ্যাপক ক্রুক্‌সের পূর্ব্বোক্ত চিন্তা সত্যই স্বপ্নের ন্যায় ছিল। বিংশ শতাব্দীর আবির্ভাবে কিন্তু তাহাই সত্যে পরিণত হইতে চলিতেছে। ইলেক্ট্রন জিনিষটা যে কি, তাহা আজও