পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রকৃতির বর্ণ বৈচিত্র্য
১৬৯

রঙ্ উজ্জ্বল ও বিচিত্র। যে-সকল উদ্ভিদের ফল আমাদের খাদ্য, তাহাদের পুষ্পের বর্ণ প্রায়ই শ্বেত হয়; বেল, কয়েতবেল, নিচু, আম, পেঁপে, কুল, পেয়ারা, লেবু, নারিকেল, খর্জ্জুর, চালিতে, করমচা, জামরুল, গোলাপজাম, ইহাদের সকলেরি ফুল সাদা। কেবল বেগুন, শশা, বিলাতি কুমড়া, ঝিঙে ও দাড়িম তাহাদের রঙিন ফুল লইয়া বাগানের এক কোণে দাঁড়াইয়া থাকে। কিন্তু এক দাড়িম ও শশা ছাড়া এই শেষোক্ত ফলগুলির মধ্যে কোনটিকেই অপক্ক অবস্থায় খাওয়া যায় না। ঋতুর সহিত এবং ফলের স্বাদুতার সহিত ফুলের বর্ণের সম্বন্ধ কোথায় তাহা আজও স্থির হয় নাই; কিন্তু একটা যে নিকট সম্বন্ধ বর্ত্তমান আছে তাহা সুনিশ্চিত।

 ডারুইন্‌ যে অভিব্যক্তির নিয়ম জীবজগতে লক্ষ্য করিয়াছিলেন, আজিকাল সকল ব্যাপারেই তাহার লক্ষণ প্রকাশ পাইতেছে। যেমন এক আদিম জীব হইতে এই বিচিত্র প্রাণী ও উদ্ভিদের সৃষ্টি হইয়াছে, সেই প্রকার এক মূল বর্ণ হইতে এখনকার ফুলের বিচিত্র বর্ণ অভিব্যক্ত হইয়াছে, একথাটা মনে হওয়া আশ্চর্য্য নয়। কিছুদিন পূর্ব্বে প্রসিদ্ধ উদ্ভিদ্‌তত্ত্ববিৎ অধ্যাপক হেন্‌স্লো (Henslow) সাহেবের মনে ঠিক্ এই কথাটির উদয় হইয়াছিল। তিনি বড় বড় অরণ্যের বনফুলের বর্ণপরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছিলেন, উহাদের অনেকের বর্ণ পীত। এই প্রমাণের উপর নির্ভর করিয়া অনেকে বলিতেছেন, পুষ্পমাত্রেরই আদিম বর্ণ পীত; নানা অবস্থার মধ্যে পড়িয়া এবং চাষ আবাদের গুণে বুনো হলদে রঙ্‌টাই পরিবর্ত্তিত হইয়া এখন নানা বর্ণে পরিণত হইয়াছে। উদ্যানে আনিয়া যত্ন করায় যে-সকল বনজ উদ্ভিদের ফুলের বর্ণ এখন পরিবর্ত্তিত হইয়াছে, অযত্নে ফেলিয়া রাখিলে কয়েক পুরুষের মধ্যে তাহাদেরি ফুল আধুনিক বিচিত্র-বর্ণ ত্যাগ করিয়া প্রাচীন পীতবর্ণ ধারণ করিতে আরম্ভ করে। আমাদের দেশের শেয়ালকাঁটা, বাবলা