পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একটি নুতন আবিষ্কার
১৮৫

গতিশীল করায়। নানা প্রকারে তাপালোকের চাপের পরিচয় পাওয়া গিয়াছে। উহাই অতিসূক্ষ্ম কণাগুলিকে চঞ্চল করে বলিয়া আবিষ্কারক প্রথমে মনে করিয়াছিলেন। কিন্তু কণাগুলিকে অনিয়মিতভাবে যথেচ্ছ চলিতে দেখিয়া ইহা যে, তাপালোকের চাপের কার্য্য নয়, তাহা তিনি বুঝিতে পারিয়াছিলেন। এই প্রকারে জড়পদার্থের পরিজ্ঞাত সাধারণ ধর্ম্মগুলির মধ্যে কোনটিরই সহিত ঐ সকল জড়কণার কার্য্যের ঐক্য দেখিতে না পাইয়া আবিষ্কারক তাহাদিগকে “সজীবকণা” (Vital particles) নামে আখ্যাত করিয়াছেন। প্রাণী ও উদ্ভিদ দেহের অতি ক্ষুদ্র অংশ এবং ধাতু প্রস্তরাদির সূক্ষ্ম কণা পরীক্ষা করিয়া সকলেরই ঠিক একই কার্য্য দেখা গিয়াছিল, সুতরাং আবিষ্কারকের মতে এই সকল সজীব কণাই সজীব নির্জীব সকল পদার্থেরই গঠনোপাদান এবং শেষ পরিণাম।

 আধুনিক জীবতত্ত্ববিদ্‌গণ জীবসামগ্রী (Protoplasm) নামক এক জিনিষকে জীবদেহের প্রধান উপাদান বলিয়া স্বীকার করেন। নির্জীব অঙ্গার, হাইড্রোজেন প্রভৃতি কতকগুলি পদার্থ কোন এক অজ্ঞাত শক্তিতে একত্র হইয়া পড়িলে তখন তাহাতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়, এবং পূর্ব্বেকার নির্জীব পদার্থ সজীবের সকল ধর্ম্ম পাইয়া জন্ম মৃত্যু ক্ষয় বৃদ্ধি প্রভৃতি কার্য্যগুলি দেখাইতে থাকে। ইহাই জীবসামগ্রী। অবশ্য কোন বৈজ্ঞানিকই অদ্যাপি জীবসামগ্রীকে নিজের পরীক্ষাগারে প্রস্তুত করিতে পারেন নাই। বিধাতার ব্রহ্মাণ্ডব্যাপী শিল্পশালাতেই ইহার উৎপত্তি, এবং কোন প্রক্রিয়ার নির্জীব পদার্থ জীবধর্ম্মী হয়, তাহা বিশ্বকর্ম্মা ব্যতীত আর কেহই জানেন না। ডুবার‍্ন্ সাহেব তাঁহার “সজীবকণার” সাক্ষাৎ পাইয়া বলিতেছেন, বৈজ্ঞানিকগণ যাহাকে জীবসামগ্রী (Protoplasm) বলেন, তাহা সজীবকণারই সমষ্টি এবং কণাগুলিই জীবসামগ্রীতে সজীবতা আনয়ন করে; অর্থাৎ “সজীবকণা” জীৱসামগ্রীর এক ধাপ নীচেকার জিনিষ।