পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৪
প্রাকৃতিকী

অণুবীক্ষণ ছিল। কোন যন্ত্র সাহায্যে অদ্যপি অণুর সাক্ষাৎ পাওয়া যায় নাই। ডুবার‍্ন্ সাহেব তাঁহার অণুবীক্ষণকে সত্যই অণুবীক্ষণ করিয়া গড়িয়া তুলিয়াছেন।

 স্বর্ণ রৌপ্য প্লাটিনম্ প্রভৃতি কতকগুলি ধাতুকে চুর্ণ করিয়া ও পিষিয়া তাহাদেরি ইন্দ্রিয়াগ্রাহ্য অতিসূক্ষ্ম কণাগুলিকে লইয়া ডুবার‍্ন্ সাহেব তাঁহার নিজের হাতের অণুবীক্ষণযন্ত্রে পরীক্ষা আরম্ভ করিয়াছিলেন। কণাগুলির প্রকৃত ব্যাসের পরিমাণ এক ইঞ্চির চল্লিশ হাজার ভাগের এক ভাগ মাত্র ছিল, কিন্তু যন্ত্রে সেগুলির প্রত্যেককে এক একটি শিশিরবিন্দুর আকারে দেখা গিয়াছিল। আশ্চর্য্যের বিষয়, ইনি যতগুলি পদার্থের কণা লইয়া পরীক্ষা করিয়াছিলেন, সকলকেই সম্পূর্ণ গোলাকার এবং একই আয়তনবিশিষ্ট দেখিয়াছিলেন।

 ইহার পর আরো সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ করিয়া ডুবার‍্ন্ সাহেব অপর যে-সকল কার্য্য প্রত্যক্ষ করিয়াছিলেন, তাহা আরো বিস্ময়কর। পরীক্ষায় প্রত্যেক কণাটিকেই তিনি চঞ্চল দেখিয়াছিলেন, মাধ্যাকর্ষণের নিয়ম না মানিয়া প্রত্যেকেই সজীব পদার্থের ন্যায় চলাফেরা আরম্ভ করিয়াছিল। কণাগুলিতে অত্যন্ত তাপ প্রয়োগ করিয়া এবং পুনঃপুনঃ চূর্ণিত ও মর্দ্দিত করিয়াও ঐ সজীবতার লক্ষণের পরিবর্ত্তন করা যায় নাই।

 দুইটি চলিষ্ণু জিনিষ বিপরীত দিক হইতে আসিয়া পরস্পরকে ধাক্কা দিলে, উভয়েরই বেগ কমিয়া আসে। কিন্তু ডুবার‍্ন্ সাহেবের আবিষ্কৃত আণুবীক্ষণিক বর্ত্তুলকণাগুলি সংঘর্ষণের এই সুপরিচিত নিয়ম মানিয়া চলে নাই। ধাক্কায় তাহাদের প্রত্যেকটির বেগের বৃদ্ধি দেখা গিয়াছিল। পদার্থমাত্রেরই সুক্ষ্ম কণার এই সকল অদ্ভুত কার্য্য দেখিয়া আবিষ্কারক বিস্মিত হইয়া পড়িয়াছিলেন। তাপ বা আলোক অতি সূক্ষ্ম পদার্থের উপর গড়িলে চাপ (Radiation pressure) দিয়া তাহাকে