পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯২
প্রাকৃতিকী

 কেবল কয়লার খনির নিকটেই যে কেরোসিন তৈল পাওয়া যায়, এখন আর একথা বলা চলে না। অনেক অঙ্গারবর্জ্জিত স্থানেও আজকাল কেরোসিনের খনি বাহির হইয়া পড়িয়াছে। বৈজ্ঞানিকগণ বলেন, এই সকল স্থানের কেরোসিন্ উদ্ভিদ্-দেহজ নয়। প্রাণীর দেহ বহুকাল ভূপ্রোথিত থাকিলে, দেহের তৈলময় উপাদানগুলি নানাপ্রকারে রূপান্তরিত হইয়া শেষে কেরোসিন হইয়া দাঁড়ায়। এই সকল কেরোসিনখনির চারিদিকের ভূমি খনন করিলে, সত্যই অনেক জীবকঙ্কাল বাহির হইয়া পড়ে; সুতরাং প্রাণীর বসা ইত্যাদি কালক্রমে পরিবর্ত্তিত হইয়া যে কেরোসিনের আকার প্রাপ্ত হইতে পারে, তাহাতেও অবিশ্বাস করা যায় না।

 আজ চল্লিশ বৎসর হইল কেরোসিনের ব্যবহার আরম্ভ হইয়াছে। ইহা দেখিলে মনে হইতে পারে, ভূগর্ভে যে এপ্রকার একটা তৈল সঞ্চিত আছে প্রাচীনেরা বুঝি তাহার কোন সন্ধান রাখিতেন না; কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার তাহা নয়। প্রাচীনেরা ইহার খুবই সন্ধান রাখিতেন, এবং আবশ্যক মত ব্যবহারও করিতেন। নিনেভা ও বাবিলনের নগরপ্রাচীরের ভগ্নাবশেষগুলি পরীক্ষা করিলে, তাহার চূণ সুরকির সহিত একপ্রকার অপরিচ্ছন্ন কেরোসিন মিশ্রিত দেখা যায়। এই জিনিষটাকে গৃহনির্ম্মাণের অপর উপাদানগুলির সহিত ব্যবহার করিলে যে গাঁথুনি দৃঢ় হয়, এবং জলে তাহার ক্ষতি করিতে পারে না, চারি হাজার বৎসর পূর্ব্বেকার লোকেরাও তাহা জানিতেন।

 পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই কেরোসিন তৈলের আকরের অল্পাধিক সন্ধান পাওয়া গিয়াছে। আমেরিকার ইউনাইটেড্‌ষ্টেট্‌স্ ও কানাডা-প্রদেশে ইহার খুব বড় বড় আকর আছে। তা’ছাড়া রুসিয়া ও আমাদের ব্রহ্মদেশেও কেরোসিন পাওয়া যাইতেছে। মাটি খুঁড়িলে কয়লা প্রভৃতি আকরিক জিনিষকে যে প্রকার স্তরে স্তরে সজ্জিত