পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চা-পান
২০৫

প্রবেশ করিয়া শরীরে নানা প্রকার কার্য্য দেখায়, বিজ্ঞানের ভাষায় সাধারণতঃ তাহাকে আল্‌কালইড্ (Alkaloids) বলে। কুইনিন্, সিন‍্কোনা, কোকেন, ষ্ট্রিক‍্নাইন্ এগুলির সকলেই আল্‌কালইড্‌। রসায়নবিদ্‌গণ চা-কে বিশ্লিষ্ট করিয়া তাহাতে ঐ প্রকার একটা বিশেষ গুণসম্পন্ন আল‍্কালইড্ দেখিতে পাইয়াছেন। ইহাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় কাফিন্ (Caffeine) বলা হইয়া থাকে। আমাদের দেহের উপৱে এই জিনিষটার যে একটুও প্রভাব নাই, একথা কখনই বলা যায় না। এই জন্যই বলিতেছিলাম, যদি কোন চা-পায়ী বলেন, চিনি, দুধ ও গরম জলের সরবতে চায়ের ক্কাথ্ মিশাইলে, এই অপূর্ব্ব পানীয়টিতে একটা সুগন্ধ ও একটু স্বাদুতা আনা হয় মাত্র, তবে তাঁহার উক্তিকে কখনই পক্ষপাতদোষশূন্য বলা যায় না। চা’য়ে এমন কিছু আছে, যাহা চা-পায়ীদিগকে চায়ের পেয়ালার দিকে আকর্ষণ করে। জঠরানলকে এই আকর্ষণের কারণ বলিতে পারা যায় না; সম্মুখে স্তুপীকৃত গরম লুচি ও মিষ্টান্ন থাকা সত্ত্বেও কেবল এক পেয়ালা চা খাইয়া চলিয়া গেলেন, এমন চা-পায়ী অনেক দেখা যায়। ফ্যাসানও ইহার কারণ নয়, ভাঙা কড়াইয়ে জল গরম করিয়া ঘটির মধ্যে চা প্রস্তুত হইয়াছে এবং সেই চা পিতল বা কাঁসার পাত্রে ঢালিয়া পান করিয়াছেন, এমন পাকা চা-পায়ীও দুর্লভ নয়। দু’চার জন একত্র বসিয়া চা পান না করিলে চায়ের সভা জমে না; সুতরাং মনে হইতে পারে, বন্ধুবান্ধবদের সহিত কিছুক্ষণের জন্য মিলনই চা’য়ের পেয়ালায় দিকে আমাদিগকে আকর্ষণ করে। কিন্তু এরকম লোকও অনেক দেখিয়াছি, যাঁহারা অন্তঃপুরের কোন নিভৃত কক্ষে বসিয়া একা একা চাপান করেন এবং ইহাতে তাঁহাদের তৃপ্তিলাভের কোনই বিঘ্ন হয় না।

 চা বিশ্লেষ করিলে কাফিন্ নামক যে একটি পদার্থ ধরা পড়ে, তাহা আমরা পূর্ব্বে উল্লেখ করিয়াছি। ইহা ছাড়া টানিন্ বা ট্যানিক্