পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০৬
প্রাকৃতিকী

এসিড্ নামক একটি অম্ল এবং একপ্রকার সুগন্ধি তৈলবৎ পদার্থও ইহাতে পাওয়া যায়। পাকা হাতে প্রস্তুত চায়ে যে একটি সুগন্ধ অনুভব করা যায়, তাহা ঐ তৈলেরই গন্ধ। জিনিষটা সহজেই বাষ্পীভূত হইয়া যায়, এজন্য খুব দক্ষ লোক ব্যতীত কেহই চায়ের এই সুঘ্রাণটি রাখিতে পারে না। চা ঠাণ্ডা হইয়া গেলে বা ঠাণ্ডা চা’কে পুনরায় গরম করিয়া খাইতে গেলে সেই তৈল উড়িয়া যায়, সুতরাং চা মাটি হইয়া যায়। বাহা হউক আমরা একে একে চা’য়ের উপাদানগুলির কার্য্য আলোচনা করিব, চায়ের কোন্ উপাদান মানুষকে এত মুগ্ধ করে, ইহাতে ধরা পড়িয়া যাইবে।

 প্রথমে চা’য়ের গরম জলটার বিষয় আলোচনা করা যাউক। আমাদের মনে হয়, যাঁহারা পাকা চা-পায়ী, তাঁহাদের মধ্যে অন্ততঃ বারো আনা লোক চায়ের ঐ গরম জলটার মোহে আবিষ্ট হইয়া চা পান করেন। কথাটা অদ্ভুত হইল, কিন্তু ইহা সম্পূর্ণ সত্য। আমরা এপ্রকার অনেক লোক দেখিয়াছি, যাঁহারা প্রাতে এক পেয়ালা ঈষদুষ্ণ জল পান না করিয়া কোন কাজে হস্তক্ষেপ করেন না। তাঁহাদের এই জলপানের নেশা ঠিক চা’য়েয় নেশার মতই প্রবল। প্রথমে হয় ত ডাক্তার বা কবিরাজের পরামর্শে ইহারা গরম জল পান স‍ুরু করেন, কিন্তু কালক্রমে ইহা এমন একটা অভাবে পরিণত হয় যে, প্রাতে গরম জল পান না করিয়া ইহাদের সুস্থ থাকা অসম্ভব হইয়া পড়ে। এই ব্যাপারটার একটা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেওয়া চলে। জলের একটা বিশেষ ধর্ম্ম এই যে, অপর পদার্থের তুলনায় ইহা অধিক তাপ ধরিয়া রাখিতে পারে। একসের লৌহে এবং ঠিক্ একসের জলে সমান তাপ প্রয়োগ কর। লৌহ তাহাতে অত্যন্ত গরম হইয়া দাঁড়াইবে, হয়ত তাহ। স্পর্শ করাও অসম্ভব হইবে; কিন্তু জল তাহাতে সে প্রকার অসহ্য উষ্ণতা দেখাইবে না, অথচ তাপটা সম্পূর্ণ জলেই থাকিয়া