পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চা-পান
২০৯

দায় হইয়া উঠে, কাজেই অজীর্ণ দেখা দেয়! মাংসের সহিত ট্যানিক্ এসিড বা অপর কষার দ্রব্যের ঘোর শত্রুতা আছে। ইহার সংস্পর্শে আসিলেই মাংস রবারের ন্যায় এক অপূর্ব্ব বস্তু হইয়া দাঁড়ায়; যাঁহাদের জঠরানল খুব প্রখর, তাঁহারাও এই প্রকারে রূপান্তরিত মাংস সহজে হজম করিতে পারেন না। বৈজ্ঞানিকেরা বলেন যে, মাংসে আল‍্বুমিন্ বলিয়া যে একটা বস্তু আছে, তাহা ট্যানিক্ এসিডের সংস্পর্শে আসিলেই ঐ প্রকার শক্ত হইয়া দাড়ায়।

 ট্যানিক্ এসিডের পূর্ব্বোক্ত গুণগুলির কথা মনে করিলে স্পষ্টই বুঝা যাইবে, খাদ্যের সহিত ইহা অধিক পরিমাণে গ্রহণ করিলে আমাদের পাকযন্ত্র কখনই প্রকৃতিস্থ থাকিতে পারে না। কিন্তু ইহাতে চা-পায়ীদের শঙ্কিত হইবার কোন কারণই দেখিতে পাওয়া যায় না। চা’য়ের পাতায় ট্যানিক্ এসিড্ অতি অল্পই আছে, এবং যাহা আছে তাহার সামান্য অংশই গরম জলের সাহায্যে তিন চারি মিনিটে বাহির হইতে পারে। বৈজ্ঞানিকগণ পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছেন, চায়ের পাতা গরম জলে ফেলিবার পরে চার মিনিট পর্য্যন্ত সেই কাফিন্ নামক বস্তুটিই পাতা হইতে বাহির হইতে থাকে; তার পরে এক একটু করিয়া ট্যানিক্ এসিড্ বাহির হইতে আরম্ভ করে। সমগ্র ট্যানিক্ এসিড্ বাহির করিতে হইলে চায়ের পাতাগুলিকে অন্ততঃ আধ্ ঘণ্টা ফুটন্ত জলে ফেলিয়া রাখার প্রয়োজন। কিন্তু চা-গুলিকে আধ ঘণ্টা জলে ভিজাইয়া রাখিয়া চা-প্রস্তুত করেন এমন আনাড়ি চা-খোর বোধ হয় সমগ্র জগতে দুর্লভ। অতএব পাকা হাতে প্রস্তুত চা-পানে যাঁহারা অভ্যন্ত, ট্যানিক্ এসিডের ভয় না করিয়া তাঁহাদিগকে আনন্দে চাপান করিবার পরামর্শ দিতে পারা যায়।

 এখন চায়ের অপর উপাদান কাফিন্ নামক উদ্ভিজ্জ-বস্তুটির বিষয় আলোচনা করা যাউক। এক কথায় বলিতে গেলে, কাফিনের ন্যায়