পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চা-পান
২১১

কাফিন্ ভক্ষণ করিয়া মাথাটাকে সজাগ করিবার চেষ্টা একত্র কার্য্য করিয়া আমাদিগকে অজ্ঞাতসারে চা’য়ের পেয়ালার দিকে টানিয়া লইয়া যায়। ভুলভ্রান্তি লইয়াই মানুষ, এবং এই বৃহৎ সংসারটাও ভুলভ্রান্তি ও মোহে আচ্ছন্ন। এগুলি না থাকিলে এই পৃথিবী স্বর্গ হইয়া পড়িত এবং মানুষগুলাও এক-একটা দেবতার স্থান অধিকার করিত। দেবতার আসন আজিও মানুষে দখল করিতে পারে নাই, কাজেই কতকগুলা মানুষ চা-পানের প্রকৃত মর্ম্মটা ভুলিয়া গিয়া সেই অন্তর্নিহিত ইচ্ছার বশে চায়ের পেয়ালা লইয়া টানাটানি করে এবং আর এক দল লোক ইহা দেখিয়া আর এক ভুলের বশে চা-পায়ীদিগকে নেশা-খোর বলিয়া ফেলে।

 আমরা যে প্রকারে চা প্রস্তুত করিয়া পান করি, তাহার দুইটি উপাদান চিনি ও দুধের কথা এখনো কিছু বলা হয় নাই। বলা বাহুল্য, কবোষ্ণ কাঁচা দুধ এবং পরিষ্কার চিনি উভয়ই অতি উপাদেয় সামগ্রী। এই দুইটি দ্রব্য অনেককে চায়ের পেয়ালার দিকে আকর্ষণ করিয়াছে এবং শেষে তাঁহারা নিত্য চা-সেবী হইয়াছেন ইহাও অনেক দেখিয়াছি। চিনি জিনিষটা সুস্বাদু হইলেও চায়ের সহিত ইহার অধিক ব্যবহার একবারেই ভাল নয়; কিন্তু দুধের ইচ্ছানুরূপ ব্যবহারে দোষ নাই। আমরা পূর্ব্বেই বলিয়াছি, চায়ের ট্যানিক্ এসিড্ স্বাস্থ্য হানি করে, কিন্তু চায়ের পাতা চারি মিনিটের উর্দ্ধকাল গরম জলে না রাখিলে উক্ত দ্রাবক পদার্থটি নির্গত হয় না; যদিই বা কিছু বাহির হয়, চায়ের ক্কাথে দুধ মিশাইলে এসিডের অনিষ্টকারিতা নষ্ট হইয়া যায়। এই কারণে যাঁহারা অল্প দুগ্ধ সংযোগে চা-পান করেন, তাঁহাদের এই কার্য্যটিকে কখনই বিজ্ঞানানুগত বলা যায় না। বিনা চিনিতে চা খাওয়া বরং ভাল, কিন্তু বিন! দুগ্ধে চা-পান একবারে নিষিদ্ধ।