পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৮
প্রাকৃতিকী

ছোট,—আধুনিক জ্যোতিষশাস্ত্রের মতে ইহা পৃথিবীরই আত্মজ। ভূতত্ত্ববিৎ পণ্ডিতগণ অনুমান করেন, পৃথিবী যখন সদ্য সদ্য তরল পদার্থে পরিণত হইয়াছিল এবং এই তরল পদার্থের উপরে যখন সূর্যের আকর্ষণে প্রবল জোয়ার-ভাঁটা চলিতেছিল, সম্ভবতঃ সেই সময়েই আমাদের চন্দ্রের জন্ম হইয়াছিল। সূর্য্যের আকর্ষণই চন্দ্রের জন্মের কারণ। সূর্য্য পৃথিবীকে এখন যে প্রকার বলে টানিয়া সমুদ্রের জলে জোয়ার-ভাঁটার উৎপত্তি করে, তখনও উহা হয় ত ঠিক সেই প্রকার বলেই টানিত, কিন্তু তখনকার টান্ তরল পৃথিবীকে বড়ই চঞ্চল করিয়া তুলিত এবং এই টানে পড়িয়াই পৃথিবীর এক অংশ বিচ্ছিন্ন হইয়া চন্দ্রের উৎপত্তি করিয়াছিল। জ্যোতিষিগণ অনুমান করেন, চন্দ্রের জন্মকালে পৃথিবী তাহার ভ্রমণ-পথের সহিত এগারো বা বারো ডিগ্রি পরিমিত হেলিয়া দুই বা তিন ঘণ্টায় এক একবার পূর্ণাবর্ত্তন (Rotation) শেষ করিত। চন্দ্রের উৎপত্তি সম্বন্ধে অনেক মতবাদ জ্যোতিষিক গ্রন্থে দেখা যায়, কিন্তু আজ এই সিদ্ধান্তটির উপরে সকলে বিশ্বাস স্থাপন করিতেছেন।

 উষ্ণ দ্রবপদার্থের একটা বিশেষ ধর্ম্ম এই যে, ইহা অনেক বায়বীয় পদার্থ শোষণ করিয়া রাখিতে পারে। যে উপাদানে চন্দ্রের উৎপত্তি হইয়াছিল, তাহা যথেষ্ট উষ্ণ ছিল, তাছাড়া প্রতি বর্গইঞ্চি স্থানে ৬২ মণ পরিমিত চাপ পড়ায় তাহার অন্তর্নিহিত বাষ্পের পরিমাণ আরো বাড়িয়া চলিয়াছিল। এই অবস্থায় যখন উহা পৃথিবী হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া দূরে উপনীত হইয়াছিল, তখন ঐ বাষ্পরাশি আর আবদ্ধ থাকিতে পারে নাই; চাপমুক্ত হইয়া চন্দ্রদেহ হইতে বাহির হইবার জন্য তাহার এক স্বাভাবিক চেষ্টা দেখা দিয়াছিল। আধুনিক জ্যোতিষিগণ বলেন, চন্দ্রের দেহে যে অসংখ্য নির্ব্বাপিত আগ্নেয়গিরির চিহ্ন দেখা যায়, সেগুলি উক্ত আবদ্ধ বাষ্পেরই কাজ। যখন চন্দ্র