পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরশ-পাথর
১১

লইলেন, হাইড্রোজেন অক্সিজেন গন্ধক স্বর্ণ রৌপ্য প্রভৃতি প্রায় নব্বইটি বস্তু দিয়াই এই বিশ্বের সৃষ্টি এবং এগুলিই প্রকৃত মূলপদার্থ। ইহাদের ধ্বংস বা রূপান্তর নাই।

 ডাল্‌টন সাহেবের এই সিদ্ধান্তটি দীর্ঘকাল ধরিয়া বৈজ্ঞানিক মহলে আদৃত হইয়া আসিতেছিল; কোন কালে যে ইহার অসত্যতা প্রতিপন্ন হইবে এ কথা কেহ কখন কল্পনাও করিতে পারেন নাই। কিন্তু এই সুপ্রতিষ্ঠিত সিদ্ধান্তের মূলেও কুঠারাঘাত হইল। ফ্রান্সের বিখ্যাত রসায়নবিদ্ ক্যুরি সাহেব ও তাঁহার সহধর্ম্মিণী রেডিয়ম্ নামক এক ধাতু পরীক্ষা করিয়া দেখিলেন, ইহা আপনা হইতেই বিশ্লিষ্ট হইয়া পরমাণু অপেক্ষাও অতি সূক্ষ্ম কণায় বিভক্ত হইয়া পড়িতেছে। রেডিয়ম ধাতুটি মূলপদার্থ বলিয়াই জানা ছিল, কাজেই একটা মূল বস্তুকে ঐপ্রকারে বিশ্লিষ্ট হইতে দেখিয়া সমগ্র জগতের বৈজ্ঞানিকগণ অবাক্ হইয়া গেলেন। ক্যুরি সাহেব এক রেডিয়মেরই বিশ্লেষ দেখাইয়া ক্ষান্ত হইলেন না, থোরিয়ম্, ইউরেনিয়ম্ প্রভৃতি বহু ধাতব মূলপদার্থের ঐ প্রকার বিশ্লেষ দেখাইতে লাগিলেন এবং এগুলি বিশ্লিষ্ট হইয়া যে, একই অতি সূক্ষ্ম পদার্থে পরিণত হয় তাহাও সকলে দেখিলেন। পরমাণুর এই সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ভগ্নাংশগুলির নাম দেওয়া হইল ইলেক্ট্রন বা অতি-পরমাণু।

 ক্যুরি সাহেবের পূর্ব্বোক্ত আবিষ্কার অতি অল্প দিনই হইল প্রচারিত হইয়াছে। ইহার সংবাদ কর্ণগোচর হইবামাত্র রদারফোর্ড, সডি, টম্‌সন প্রমুখ বর্ত্তমান যুগের প্রধান বৈজ্ঞানিকগণ প্রত্যেকে স্বাধীনভাবে বিষয়টি লইয়া গবেষণা আরম্ভ করিয়াছিলেন; আজও এই সকল গবেষণায় বিরাম নাই; ইহার ফলে আজকাল বিজ্ঞানের নূতন তত্ত্ব নিত্যই আবিষ্কৃত হইতেছে। ইঁহারা দেখিতে পাইলেন, রেডিয়ম ধাতু বিশ্লিষ্ট হইলে কেবলি ইলেক্ট্রন অর্থাৎ অতি-পরমাণুতে পরিণত