পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
প্রাকৃতিকী

দর্শন ঘটিয়াছিল। ইংলণ্ডের প্রধান রসায়নবিদ র‍্যাম্‌জে (Sir William Ramsay) সাহেব আজকাল মুক্তকণ্ঠে বলিতে আরম্ভ করিয়াছেন, লৌহকে সুবর্ণে এবং রাঙ্‌কে রৌপ্যে পরিণত করা অসাধ্যসাধন নয়। সুতরাং বহু শতাব্দী পূর্ব্বে সেই আল্‌কেমিষ্টের দল যে পরশ-পাথরের সন্ধানে ছুটিয়াছিলেন, আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণকেও তাহারি অনুসন্ধানে ছুটিতে হইতেছে।

 র‍্যাম্‌জে সাহেবের আবিষ্কারের কথা বুঝিতে হইলে একটু ভূমিকার প্রয়োজন হইবে। সৃষ্টিতত্ত্বের কথা উঠিলেই অতি প্রাচীন পণ্ডিতগণ পঞ্চভূতের অবতারণা করিতেন। তাঁহাদের বিশ্বাস ছিল, ক্ষিতি অপ্ তেজঃ প্রভৃতি পঞ্চ পদার্থ দিয়াই এই ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি এবং এই পাঁচটি পদার্থের প্রত্যেকটিই মূলপদার্থ অর্থাৎ তাহাদের আর রূপান্তর নাই। এই যে বৃক্ষলতা, পশুপক্ষী, ঘরদুয়ার, সকলি সেই পঞ্চভূতের বিচিত্র মিলনে উৎপন্ন; এগুলি যখন নষ্ট হইয়া যায় তখন আবার সেই পঞ্চভূতের আকার গ্রহণ করে। প্রাচীনদের এই সিদ্ধান্ত আধুনিক বৈজ্ঞানিকদের হাতে পড়িয়া স্থির থাকিতে পারে নাই। গত উনবিংশ শতাব্দীতে সুপ্রসিদ্ধ বৈজ্ঞানিক ডাল্‌টন সাহেব প্রত্যক্ষ দেখাইয়াছিলেন, ক্ষিতি অপ্ প্রভৃতির কোনটিই মূলপদার্থ নয়। ইহাদের প্রত্যেকটিকেই বিশ্লেষ করা যায় এবং ইহাতে তাহাদের মধ্যে একাধিক অপর বস্তুর মিশ্রণ দৃষ্ট হয়। ডাল্‌টন্ সাহেব প্রচার করিলেন, এই ব্রহ্মাণ্ড পঞ্চভূতে সৃষ্ট নয়; হাইড্রোজেন অক্সিজেন প্রভৃতি বায়ব পদার্থ, গন্ধক অঙ্গার প্রভৃতি কঠিন পদার্থ এবং স্বর্ণ রৌপ্য প্রভৃতি ধাতব পদার্থ দিয়া এই জগতের সৃষ্টি। তিনি প্রত্যক্ষ দেখাইতে লাগিলেন, বায়ু জল প্রভৃতি ভূতপদার্থ, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন্ ও হাইড্রোজেন্ দিয়াই গঠিত। কাজেই প্রাচীন যুগের পঞ্চভূতের স্থানে বহু ভূতকে বসাইতে হইল; বৈজ্ঞানিকগণ স্বীকার করিয়া