পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩০
প্রাকৃতিকী

নাই; পৃথিবী হইতে এখন চন্দ্রের যে দূরত্ব দেখিতেছি, তাহা অতি ধীরে ধীরে দীর্ঘ সময়ে হইয়াছে। অতি নিকটে থাকিয়া চন্দ্র পৃথিবীর উপর কি প্রকার প্রভাব বিস্তার করিয়াছিল তাহা জানিবার উপায় নাই, এবং সেসম্বন্ধে কোন অনুমান করাও চলে না। ক্রমে দুরবর্ত্তী হইয়া চন্দ্র যখন পৃথিবী হইতে ছত্রিশ হাজার মাইল দূরে অবস্থান করিতেছিল, সেই সময়ের অবস্থার কথা পণ্ডিতগণ অনুমান করিতে পারেন। এই ব্যবধানে যাইতে কত সময় লাগিয়াছিল তাহাও গণনা করা যায়। এই প্রকার গণনায় দেখা গিয়াছে, জন্মগ্রহণের পর অন্ততঃ পাঁচ কোটী ষাইট্ লক্ষ বৎসর অতিবাহন না করিয়া চন্দ্র কখনই পৃথিবী হইতে ছত্রিশ হাজার মাইল দূরে যাইতে পারে নাই।

 পৃথিবীর অভ্যন্তরে কি আছে, ইহা লইয়া আধুনিক ও প্রাচীন পণ্ডিতমহলে অনেক বাগ্‌বিতণ্ডা হইয়া গিয়াছে। যাহা হউক পণ্ডিতদিগের মধ্যে অনেকেই স্বীকার করেন, আমরা ভূপৃষ্ঠে যে শিলামৃত্তিকা দেখিতেছি, তাহা ভূগর্ভের কেবল চারিশত মাইল পর্য্যন্ত বিস্তৃত আছে, তাহার নীচে আকেন্দ্র সমস্ত স্থানই লৌহ প্রধান গুরুপদার্থে পূর্ণ। শিলামৃত্তিকাদি গড়ে জল অপেক্ষা তিন গুণ অধিক ভারি, কিন্তু গভীরতর প্রদেশের সেই ধাতুজ দ্রব্যের গুরুত্ব জল অপেক্ষা প্রায় আট গুণ অধিক। বৈজ্ঞানিকগণ বলেন, যখন চন্দ্র জন্মগ্রহণ করিয়াছিল তখন পৃথিবীর ধাতুজ অংশটা বোধ হয় ভূ-কেন্দ্রে কঠিনাবস্থাতেই ছিল; কেবল ভূপৃষ্ঠের শিলামৃত্তিকারই উপাদান দ্রব ও বায়ব আকারে পৃথিবীকে ঘেরিয়া অবস্থান করিতেছিল। কাজেই চন্দ্র তাহার নিজের দেহখানি পৃথিবীর শিলামৃত্তিকা দিয়াই প্রস্তুত করিতে পারিয়াছিল; ভূগর্ভের গভীর প্রদেশে যে ধাতব দ্রব্য ছিল তাহা নিজের দৈহিক পুষ্টির জন্য স্পর্শ করিতে পারে নাই।

 বৈজ্ঞানিকগণ মনে করেন, চন্দ্রের জন্মের কিছুকাল পরেই