পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পৃথিবীর শৈশব
২৩৩

গণ সমুদ্রের ক্রমিক প্রসারতালাভের যে ব্যাখ্যান দিয়াছেন, এখন তাহা আলোচনা করা যাউক। পৃথিবীর অধিকাংশ সমুদ্রেরই গভীরতা আমাদের জানা আছে, সুতরাং সমগ্র সমুদ্রের জলের পরিমাণও হিসাব করা যায়। এই হিসাবে সমুদ্রের গড় গভীরতা দুই মাইল সাত শত গজের কিঞ্চিৎ কম হয়। পৃথিবীর জল, নদী ও সমুদ্রের গর্ভে আশ্রয় গ্রহণ না করিয়া যদি সমভাবে সমগ্র ভূ-পৃষ্ঠে বিস্তৃত থাকিত, তাহা হইলে জলের গভীরতা কত হইত তাহাও হিসাব করা হইয়াছে। ইহাতে দেখা গিয়াছে, সমুদ্রের জল ভূপৃষ্ঠের সর্ব্বাঙ্গে ছড়াইয়া পড়িলে জলের গভীরতা এক মাইল বারো শত গজের কিঞ্চিৎ অধিক হইয়া দাঁড়ায়। কাজেই স্বীকার করিতে হইতেছে, সমুদ্রের জল যখন বাষ্পাকারে আকাশে ভাসমান ছিল তখন উহা এক মাইল বারো শত গজ উচ্চ জলের চাপের অনুরূপ বলে ভূপৃষ্ঠকে চাপিয়া রাখিত। এখন মনে করা যাউক, যেন এক দিন হঠাৎ আকাশের সমগ্র জলীয় বাষ্প জমিয়া ভূপৃষ্ঠের নিম্ন ভূমিতে আশ্রয়গ্রহণ করিল। বলা বাহুলা, ইহাতে স্থলভাগের উপরকার চাপই কমিয়া আসিবে, এবং নিম্ন ভূমির যে-সকল অংশে জল সঞ্চিত হইল তাহার উপরকার চাপ বাড়িয়া যাইবে। সমুদ্রের উৎপত্তির পরে, এই প্রকারে স্থলভাগের উপরকার চাপ বৃদ্ধি হওয়াকে অবলম্বন করিয়াই পণ্ডিতগণ সমুদ্রের ক্রমিক প্রসারের ব্যাখ্যান দিতে চেষ্টা করিয়াছেন। ইঁহারা বলিতেছেন, স্থলভাগে যখন জলীয় বাষ্পের চাপ ছিল, তখন প্রচুর উষ্ণ থাকা সত্ত্বেও ভূগর্ভের অনেক দূর কঠিনাবস্থায় ছিল, কারণ চাপের আধিক্য থাকিলে কোন জিনিষ, সহজে গলিতে চায় না। জলের উৎপত্তির সহিত এই চাপ অন্তর্হিত হইবামাত্র স্থলভাগের নিম্ন স্তরগুলি আর কঠিনাকারে থাকিতে পারে নাই। ভূগর্ভস্থ