পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩২
প্রাকৃতিকী

বর্ত্তমান আকার প্রাপ্ত হইয়াছে, সেসম্বন্ধে অনেক সিদ্ধান্তের কথা শুনিতে পাওয়া যায়। আমরা এগুলির মধ্যে কেবল একটিমাত্রের উল্লেখ করিব। ব্যাপারটি বুঝিতে হইলে জড়ের একটি সুপরিচিত ধর্ম্মের কথা স্মরণ করা প্রয়োজন। আমরা পৃথিবীতে যত সামগ্রী দেখিতে পাই, তাহাদের প্রত্যেকেই এক একটি নির্দ্দিষ্ট উত্তাপ পাইলে দ্রব হয়। লৌহকে অল্প তাপ দিতে থাক, তাহা গলিবে না, কিন্তু প্রযুক্ত তাপের মাত্রা ১১৫০° ডিগ্রিতে উঠিলেই উহা গলিতে আরম্ভ করিবে। কেবল লৌহ নয়, স্বর্ণ রৌপ্য তাম্র শিলা মৃত্তিকা সকল বস্তু ঐ লৌহের ন্যায়ই এক একটি নির্দ্দিষ্ট উষ্ণতায় গলিতে আরম্ভ করে। কিন্তু এই প্রকারে দ্রব হওয়ার সহিত বাহিরের চাপের একটা অতি নিকট সম্বন্ধ আছে। যে-পাত্রে ধাতুকে গালানো যাইতেছে, তাহার ভিতরে যদি কোন প্রকার চাপ প্রয়োগ করা যায়, তাহা হইলে সাধারণ বায়ুর চাপে উহা যে উষ্ণতায় গলিয়া যাইত, এখন আর সে উষ্ণতায় গলিবে না। উষ্ণতা অধিক লাগিবে। জড়ের এই সুপরিচিত ধর্মটির কথা মনে রাখিয়াই বৈজ্ঞানিকগণ বলেন, ভূগর্ভের কেন্দ্রসন্নিহিত স্থান খুব উষ্ণ হইলেও তথাকার ধাতুমৃত্তিকা দ্রবাবস্থায় নাই; উপরিস্থিত চারি হাজার মাইল গভীর শিলা মৃত্তিকার স্তরগুলি কেন্দ্র-সন্নিহিত পদার্থে যে চাপ প্রয়োগ করিতেছে তাহা অতিক্রম করিয়া লৌহ প্রভৃতি ধাতুকে দ্রবীভূত করিতে পারে এমন উত্তাপ পৃথিবীর কেন্দ্রে নাই। কাজেই যদি কেহ বলেন, ভূপৃষ্ঠে এক শত বা দুই শত মাইল নীচেকার পদার্থ গলিতাবস্থায় আছে, তাহা বিশ্বাস করা যায়। কারণ সেখানে তাপের তুলনায় চাপ অল্প। কিন্তু যদি কেহ বলিয়া ফেলেন যে, পৃথিবীর কেন্দ্র প্রদেশ কেবল দ্রব ধাতুতেই পূর্ণ, তবে তাহা কোন ক্রমে বিশ্বাস করা যায় না।

 পূর্ব্বোক্ত ব্যাপারটি অবলম্বন করিয়া আধুনিক বৈজ্ঞানিক