পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মঙ্গলগ্রহ
২৩৯

আসে বলিয়া, সকল প্রাকৃতিক ব্যাপারই ভিন্ন লক্ষণাক্রান্ত হইয়া পড়ে। গ্রহাদির গুরুত্বের তুলনায় সূর্য্য নক্ষত্র প্রভৃতি বৃহৎ জ্যোতিষ্কগুলির গুরুত্ব অনেক অধিক; সুতরাং ইহাদের আকর্ষণও অত্যন্ত প্রবল। পরীক্ষা করিয়া দেখা গিয়াছে, এই শ্রেণীর বড় জ্যোতিষ্কগুলি হাইড্রোজেন্, হেলিয়ম্ প্রভৃতি অতি লঘু বাষ্পগুলিকেও তাহাদের আকাশ হইতে যাইতে দেয় নাই। নক্ষত্রদিগের আকাশ সর্ব্বদাই লঘু-গুরু নানাজাতীয় বাষ্পে পূর্ণ থাকে। পৃথিবীর গুরুত্ব মঙ্গলের তুলনায় অধিক হইলেও, সূর্য্য ও নক্ষত্রাদির তুলনায় অতি অল্প। কাজেই পৃথিবী তাহার দুর্ব্বল আকর্ষণে হাইড্রোজেন্, হেলিয়ম্ প্রভৃতি লঘু-বাষ্পগুলিকে আকাশে আবদ্ধ রাখিতে পারে নাই। এগুলি বহুকাল পৃথিবীকে ত্যাগ করিয়া মহাকাশে চলিয়া গিয়াছে। এখন কেবল অক্সিজেন্, নাইট্রোজেন্ প্রভৃতি গুরুতর বাষ্পগুলিই আমাদের আকাশকে আচ্ছন্ন করিয়া রাখিয়াছে। চন্দ্রের গুরুত্ব ও আয়তন উভয়ই পৃথিবী অপেক্ষা অনেক অল্প। এইজন্য ইহার আকাশের অবস্থা আরও শোচনীয় হইয়া দাঁড়াইয়াছে। অক্সিজেন্ ও নাইট্রোজেনের ন্যায় গুরু বাষ্পকেও চন্দ্র টানিয়া রাখিতে পারে নাই। কাজেই চন্দ্রের দেশে আকাশ একপ্রকার শূন্য হইয়াই রহিয়াছে। চন্দ্রগর্ভ হইতে যে জলীয় ও অঙ্গারক বাষ্প উত্থিত হয়, তাহাই ক্ষণকালের জন্য আকাশে বিচরণ করিয়া ক্রমে চিরকালের জন্য মহাকাশে অন্তর্হিত হইয়া যায়। মঙ্গলের গুরুত্ব, চন্দ্রের ন্যায় নিতান্ত অল্প নয়; সুতরাং ইহাতে নাইট্রোজেন্ বা অক্সিজেনের ন্যায় গুরু বাষ্প থাকারই সম্ভাবনা অধিক।

 মঙ্গলপৃষ্ঠে যে জলীয় বাষ্প আছে, গত ১৮৯২ সাল এবং তৎপূর্ব্বকার পর্য্যবেক্ষণে তাহার অনেক প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে। পৃথিবীর মেরুসন্নিহিত প্রদেশ যেমন শীতকালে বরফে আচ্ছন্ন হইয়া পড়ে, মঙ্গলগ্রহে শীতকাল উপস্থিত হইলে, তাহার মেরুপ্রদেশকেও ঠিক সেই প্রকারে