পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪০
প্রাকৃতিকী

তুষারাচ্ছন্ন হইতে দেখা যায়। গ্রীষ্মকাল উপস্থিত হইলে পৃথিবীরই মত সেই মাঙ্গলিক তুষাররাশি গলিয়া মেরুপ্রদেশের শুভ্রতা নষ্ট করিয়া ফেলে।

 মেরুপ্রদেশের পূর্ব্বোক্ত শুভ্রমুকুটকে কয়েকজন পণ্ডিত কঠিন অঙ্গারক-বাষ্প বলিয়া স্থির করিয়াছিলেন। আমেরিকার লিক্ মানমন্দিরের প্রধান-জ্যোতিষী জগদ্বিখ্যাত পণ্ডিত পিকারিঙ্ সাহেব ইহার প্রতিবাদ করিয়া দেখাইয়াছেন,—যতই শীতল করা যাউক না কেন, আমাদের বায়ুমণ্ডলের চাপের অন্ততঃ পাঁচগুণ চাপ না পাইলে অঙ্গারক বাষ্প জমাট বাঁধিতে পারে না; কিন্তু মঙ্গলের আকাশের চাপ ভূ-বায়ুর চাপ অপেক্ষা অনেক কম; সুতরাং জলীয় বাষ্পই যে জমাট বাঁধিয়া মঙ্গলে শ্বেতমুকুটের রচনা করে, তাহাতে আর সন্দেহ করিবার কারণ নাই; কিন্তু পৃথিবীর মত মঙ্গলে প্রচুর জল নাই, এবং মাঙ্গলিক সমুদ্রগুলিও পৃথিবীর সমুদ্রের ন্যায় গভীর নয়। পৃথিবীর জলাভূমিগুলি যেমন অগভীর, মাঙ্গলিক সমুদ্রগুলিও প্রায় তদ্রূপ। শীতের পর বসন্ত উপস্থিত হইলে মেরুপ্রদেশের তুষাররাশি গলিয়া এই নিম্ন ভূমিগুলিকে জলপ্লাবিত করে।

 আমরা পূর্ব্বেই বলিয়াছি, মঙ্গলের তুলনায় পৃথিবীর গুরুত্ব অত্যন্ত অধিক, কাজেই ইহার আকর্ষণের পরিমাণও মঙ্গল অপেক্ষা অনেক অধিক। এই আকর্ষণে পৃথিবী খুব লঘু বাষ্পগুলিকে টানিয়া রাখিতে পারে নাই বটে, কিন্তু জলীয় বাষ্পকে সে সহজে ছাড়িতেছে না। এই কারণে ইহা নানা আকার পরিগ্রহ করিয়া সর্ব্বদা ভূপৃষ্ঠে ও আকাশে বিচরণ করিতেছে; কিন্তু মঙ্গল তাহার দুর্ব্বল টানে জলীয় বাষ্পকে আবদ্ধ রাখিতে পারে না। কাজেই এই বাষ্পগুলি ধীরে ধীরে গ্রহত্যাগ করিয়া পলাইয়া যায়। পিকারিঙ্ সাহেব বলিতেছেন, গ্রহের গর্ভ হইতে যে-সকল জলীয় বাষ্প সদ্য উত্থিত হইতেছে, তাহা