পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মঙ্গলগ্রহ
২৪১

জমিয়াই মেরুপ্রদেশের তুষারাবরণ উৎপন্ন করে, এবং বসন্তাগমে গলিয়া জল ও বাষ্পাদির আকার প্রাপ্ত হইলে তাহার সমস্তই গ্রহত্যাগ করিয় চলিয়া যায়; সুতরাং দেখা যাইতেছে, বর্ত্তমান অবস্থায় মঙ্গলে জল থাকিলেও, যখন গর্ভস্থ জলভাণ্ডার সম্পূর্ণ শূন্য হইয়া যাইবে, তখন আর একবিন্দু জলও মঙ্গলপৃষ্ঠে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না।

 পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের চাপ ত্রিশ ইঞ্চি উচ্চ পারদের ভারকে অনায়াসে উপরে উঠাইয়া রাখিতে পারে। হিসাব করিয়া দেখা গিয়াছে, মঙ্গলের আকাশের চাপ সাত ইঞ্চির অধিক উচ্চ পারদকে ঠেলিয়া রাখিতে পারে না। মানুষ কত তরল বায়ুর মধ্যে থাকিয়া প্রাণধারণ করিতে পারে, তাহার পরীক্ষা হইয়া গিয়াছে। ইহাতে দেখা গিয়াছিল, বায়ুকে তরল করিতে করিতে যখন তাহার চাপ পাঁচ ইঞ্চি উচ্চ পারদের ভারের অনুরূপ হয় তখন সেই বায়ু দ্বারা আর শ্বাসপ্রশ্বাসের কাজ চলে না। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের চাপ প্রায় সাত ইঞ্চি পারদের ভারের তুল্য সুতরাং এই বায়ু শ্বাসপ্রশ্বাস করিয়া, এবং গ্রহপৃষ্ঠস্থ জল ব্যবহার করিয়া, কোন জীবের প্রাণধারণ করা অসম্ভব নয়; কিন্তু এইপ্রকার প্রতিকূল অবস্থায় পড়িয়া ঠিক আমাদিগের মত বুদ্ধিমান প্রাণী মঙ্গলগ্রহে জন্মিতে পারিয়াছে কি না, সে বিষয়ে ঘোর সন্দেহ আছে।

 দূরবীক্ষণসাহায্যে মঙ্গল পর্য্যবেক্ষণ করিলে তাহার উপরে কতকগুলি সুবিন্যস্ত রেখা দেখিতে পাওয়া যায়। এইগুলিকে লইয়া আজ কয়েক বৎসর জ্যোতির্ব্বিদ্‌গণের মধ্যে খুব আলোচনা চলিতেছে। একদল জ্যোতিষী বলিতেছেন, এই রেখাগুলি মঙ্গলপৃষ্ঠস্থ বড় বড় খাল ব্যতীত আর কিছুই নয়। বরফগলা জলকে মেরুপ্রদেশ হইতে দূরদেশে লইয়া আসিবার জন্য মাঙ্গলিক প্রাণিগণ এই খালগুলিকে কাটিয়া রাখিয়াছে। ইহারা কোনক্রমে এগুলিকে স্বাভাবিক খাল