পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মঙ্গলগ্রহ
২৪৩

খননের প্রধান উদ্দেশ্য হয়, তবে ঐ সকল খালের কোনই সার্থকতা খুঁজিয়া পাওয়া যায় না। যে মাঙ্গলিক জীব সমুদ্রগর্ভে খাল খনন করিতে পারে, তাহাকে কখনই সুবুদ্ধি প্রাণী বলা যাইতে পারে না।

 মঙ্গলগ্রহ, বুদ্ধিমান প্রাণী দ্বারা অধ্যুষিত কি না, এই প্রশ্নটি লইয়া যে তর্ককোলাহলের সৃষ্টি হইয়াছে, তাহার আজও নিবৃত্তি হয় নাই। জ্যোতির্ব্বিদ্‌মাত্রেই কোন এক পক্ষ অবলম্বন করিয়া বিচারে প্রবৃত্ত রহিয়াছেন। বলা বাহুল্য, প্রশ্নটির মীমাংসাচেষ্টায় যে-সকল তথ্য সংগৃহীত হইতেছে, তাহাতে মঙ্গলসম্বন্ধে অনেক নূতন সংবাদ আবিষ্কৃত হইয়া পড়িতেছে; কিন্তু তথাপি এখনো এসম্বন্ধে অনেক জানিতে বাকি। এগুলি নিশ্চিতরূপে আবিষ্কৃত না হইলে, মঙ্গলের প্রাকৃতিক অবস্থাসম্বন্ধে কোন সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব হইবে। প্রসিদ্ধ জ্যোতিষী সিয়াপারেলি (Schiaparelly) সাহেব বহুপূর্ব্বে মঙ্গলে যেসকল রেখা দেখিতে পাইয়াছিলেন, গত ১৮৯৯ সালের পর্য্যবেক্ষণে সেগুলিকে দেখা যায় নাই; কিন্তু ১৯০৩ সালের পর্য্যবেক্ষণে সেগুলি আবার যথাস্থানে আবির্ভূত হইয়াছিল। মঙ্গলগ্রহের এই প্রকার অনেক খুঁটিনাটি ব্যাপারের কোন ব্যাখ্যানই এ পর্য্যন্ত পাওয়া যায় নাই।

 মধ্যে মধ্যে মঙ্গলগ্রহ এক একবার পৃথিবীর নিকটবর্ত্তী হইয়া আত্মপরিচয় প্রদানের সুযোগ উপস্থিত করিবে। দেশবিদেশের জ্যোতির্ব্বিদ্‌গণ এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করিবেন; সুতরাং আশা করা যাইতে পারে, এই সকল পর্য্যবেক্ষণের ফলে বিশ্বের বিচিত্র সৃষ্টির এক অতি ক্ষুদ্র অংশ হইতে রহস্য-যবনিকা উদ্ঘাটিত হইয়া পড়িবে, এবং সঙ্গে সঙ্গে আমরা বিশ্বনাথের সৃষ্টিমহিমাকে আরো প্রত্যক্ষভাবে উপলব্ধি করিবার সুযোগ প্রাপ্ত হইব।