পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নূতন নীহারিকাবাদ
২৪৭

বলিয়াই এগুলি গ্রহদিগের নিকট ধরা দিয়াছে। আকর্ষণের বন্ধন ছিন্ন করিয়া পলাইবার সামর্থ্য এখন ইহাদের কাহারো নাই।

 পূর্ব্বের কথাগুলি হইতে বুঝা যায়, সিদ্ধান্তটি প্রচলিত নীহারিকাবাদেরই এক নূতন সংস্করণ। প্রচলিত সিদ্ধান্তে আমরা এক ঘূর্ণ্যমান নীহারিকার অস্তিত্ব মানিয়া থাকি, এবং তার পর আবর্ত্তনের চাপে উহার সীমান্তবর্ত্তী কতক অংশ বিচ্যুত হইয়া পড়ে বলিয়া স্বীকার করি। সি. সাহেব এইগুলিই মানিতে চাহিতেছেন না; ইনি বলিতেছেন, প্রাথমিক নীহারিকায় আবর্ত্তনের চাপ ছিল না। চিনির রসে দানা বাঁধিতে শুরু হইলে রসভাণ্ডের স্থানে স্থানে যেমন আপনা হইতেই দানা বাঁধা শুরু হয়, কতকটা সেই প্রকারে নীহারিকার গ্রহগুলি জমিতে আরম্ভ করিয়াছিল।

 এই নব সিদ্ধান্তের সাহায্যে ধূমকেতুর এক নূতন জন্মপত্রিকা প্রস্তুত হইয়াছে। সি. সাহেব বলিতেছেন, এই ক্ষুদ্র জ্যোতিষ্কগুলি প্রাথমিক নীহারিকারই সীমান্ত প্রদেশে জন্মিয়াছিল; বোধ হয় নীহারিকার ভিতরকার অংশটা গ্রহোপগ্রহের রচনাতেই নিঃশেষ হইয়া গিয়াছিল। এখন সূর্য্যের আকর্ষণে এক একবার জগতের কেন্দ্রের নিকট আসিয়া তাহা আবার সেই সীমান্তবর্ত্তী জন্মস্থানের কাছাকাছি হইতেছে।

 অতি প্রাচীনকাল হইতে জ্যোতিষিগণ আকাশের নানা অংশে বহু নীহারিকা দেখিয়া আসিতেছেন; কিন্তু এগুলির উৎপত্তিতত্ত্ব অদ্যাপি জ্যোতিঃশাস্ত্রের একটা প্রকাণ্ড সমস্যা হইয়া রহিয়াছে। নূতন সিদ্ধান্তের প্রতিষ্ঠাতা বলিতেছেন, শত সূর্য্যোপম নক্ষত্র হইতে আরম্ভ করিয়া ক্ষুদ্র উল্কাপিণ্ড প্রভৃতি ছোটবড় সকল জ্যোতিষ্কই নিজ নিজ দেহ হইতে নিয়তই অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা ত্যাগ করিতেছে। এই গুলিই দীর্ঘকাল এলোমোলো ভাবে আকাশে অসিয়া শেষে একত্র হইয়া