পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪৮
প্রাকৃতিকী

নীহারিকার উৎপত্তি করে। প্রায় সমগ্র আকাশই যে জ্যোতিষ্কদেহচ্যুত ধুলিতে আচ্ছন্ন, তাহা আকাশের ফোটোগ্রাফ্‌চিত্রে এখন প্রত্যক্ষ দেখা যায়। সুতরাং বুঝা যাইতেছে, জ্যোতিষ্কের দেহই ক্ষয় পাইয়া নীহারিকার উৎপত্তি করে এবং কালক্রমে জমাট বাঁধিয়া আবার নূতন সৃষ্টির কারণ হয়। জন্মমৃত্যু ও ভাঙ্গাগড়ার ব্যাপার কেবল আমাদের ক্ষুদ্র পৃথিবীর ঘটনা নয়। অনন্ত নক্ষত্রলোকেও অনন্তকাল ধরিয়া সেই লীলা চলিতেছে। সর্ব্বত্রই মৃত্যু পুরাতনকে নূতন জীবন দান করিতেছে।

 নীহারিকাগুলির অবস্থান পরীক্ষা করিলে দেখা যায়, ইহাদের প্রায় সকলেই ছায়াপথ (Milky Way) হইতে দূরে অবস্থিত। এই ব্যাপারটি শতাধিক বৎসর পূর্ব্বে ইংলণ্ডের প্রসিদ্ধ জ্যোতিষী সার্ উইলিয়ম্ হার্সেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছিল, এবং পরে তাঁহারই স্বনামখ্যাত পুত্র সার্ জন্ হার্সেল উহা লইয়া অনেক গবেষণা করিয়া ছিলেন। কিন্তু কি কারণে আকাশের অপরাংশ ছাড়িয়া নীহারিকাগুলি ছায়াপথ হইতে দূরে অবস্থান করে, তাহার প্রকৃত তত্ত্ব জানা যায় নাই। অধ্যাপক সি, গত দশ বৎসর জ্যোতিষ্কের আকর্ষণবিকর্ষণের ফল অনুসন্ধানে নিযুক্ত ছিলেন। এই সময়ে নীহারিকার অবস্থানসম্বন্ধে একটা নূতন তত্ত্ব তাঁহার মনে হইয়াছিল। এখন তাহাই অবলম্বন করিয়া বলিতেছেন, যখন বিকর্ষণ শক্তির প্রভাবে তাড়িত হইয়া নক্ষত্রদিগের দেহের কণাই নীহারিকার রচনা করে, তখন সেগুলি যে, নক্ষত্রবহুল ছায়াপথের নিকট পুঞ্জীভূত হইবে, ইহা কখনই সম্ভব নয়।

 পূর্ব্বোক্ত কথাগুলি সত্য হইলে ছায়াপথে নক্ষত্রের যে বিশ্বাস দেখিয়া হার্সেল্ সাহেব অবাক্ হইয়াছিলেন, তাহার একটা সুব্যাখ্যা পাওয়া যায়। সি, সাহেব বলিতেছেন, নীহারিকাগুলি ছায়াপথের