পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৩০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গ্রহদিগের কক্ষা
২৬১

 পূর্ব্বের কথাগুলি হইতে বুঝা যাইতেছে, সৌরজগতের গ্রহগুলির মধ্যে কতকগুলির মোটামুটি হিসাবে স্থির-কক্ষা আছে, এবং কতকগুলির নাই। যাহাদের নাই, তাহারা জীবন-সংগ্রামে কিছুদিন যুঝিয়া বৈরিহস্তে আত্মসমর্পণ করে। যাহাদের আছে, তাহারা বাহিরের প্রবল শত্রুর সহিত আপোস করিয়া এবং বাহিরের সহিত নিজের চালচলন মিলাইয়া বর্ত্তিয়া থাকে। এখানেও সেই বৃদ্ধ ডারুইনের অভিব্যক্তিবাদের সূত্র তলায় তলায় কাজ করিতেছে।

 কি প্রকারে বুধ, শুক্র, পৃথিবী ও মঙ্গলাদি-গ্রহযুক্ত এই বিশাল সৌরজগতের সৃষ্টি হইল এখন বোধ হয় বুঝা কঠিন হইবে না। প্রথমে সূর্য্য এবং বৃহস্পতিই সৌরজগতে রাজত্ব করিত; তার পর দলে দলে উল্কাপিণ্ড বা ক্ষুদ্র গ্রহাকার নূতন অতিথির আগমন হইল। এগুলি যথেচ্ছ প্রকারে যথেচ্ছ পথে ছুটিয়া চলিত। সূর্য্য এবং বৃহস্পতি সুবিধা বুঝিয়া অধিকাংশকে গ্রাস করিয়া পুষ্টাঙ্গ হইল; সৌরজগতে ছোটখাট উল্কাপিণ্ড বা ধূলিকণাও রহিল না; যাহারা সৌরাধিকারে প্রবেশকালে অনুকূল গতিবিধি লইয়া আসিয়াছিল, কেবল তাহারাই টিকিয়া থাকিল। এই টিকিয়া-থাকা অতিথিগণই এখন এক এক নির্দ্দিষ্ট পথে, নির্দ্দিষ্ট দূরে থাকিয়া সূর্য্যপ্রদক্ষিণ করিতেছে। ইহাদিগকে লইয়াই সৌরজগৎ।

 আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণ যে-সকল প্রাকৃতিক ব্যাপারের মুলে গিয়া পৌঁছিয়াছেন, প্রায়ই তাহাদের গোড়ার একটি নিয়মের সন্ধান পাইয়াছেন। জর্জ্জ ডারুইন্ সৃষ্টিতত্ত্বের যে ব্যাখ্যান দিতেছেন, তাহাতে তিনি এখনো কোন নির্দ্দিষ্ট নিয়মের সন্ধান পান নাই। ঠিক কোন্ অবস্থায় সৌরজগতে প্রবেশ করিলে নবাগত গ্রহগণ চিরনির্দ্দিষ্ট কক্ষায় ভ্রমণ করিতে পারে, তাহার সূত্র আজও আবিষ্কৃত হয় নাই; তা’ছাড়া কোন্ গ্রহের কক্ষা স্থির এবং কোন্‌টির কক্ষা বিচলনশীল তাহা নির্ণয় করিবার নিয়ম আজও ধরা পড়ে নাই। কিন্তু এই সকল মূল সূত্রগুলি