পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৪
প্রাকৃতিকী

অনুমান করিতে পারি। কিন্তু প্রাচীন জ্যোতিষীরা গণনা করিয়া চন্দ্র-সূর্য্যের গ্রহণ ও গ্রহগণের উদয়াস্ত প্রভৃতি ব্যাপারে যে ভবিষ্যদ্বাণী প্রচার করিতেন, তাহাই বোধ হয় অবৈজ্ঞানিক জনসাধারণকে বিস্মিত করিত। আজও ইংরাজি নৌপঞ্জিকা (Nautical Almanac) এবং আমাদের দেশীয় পঞ্জিকায় গ্রহণাদিসম্বন্ধে যে-সকল ভবিষ্যদ্বাণী লিপিবদ্ধ থাকে, তাহা মিলিয়া গেলে, জনসাধারণকে কম বিস্মিত করে না।

 এখন প্রশ্ন হইতে পারে, জ্যোতিঃশাস্ত্রের এই মোহিনী শক্তিটির উৎপত্তি কোথায়? বিজ্ঞ পাঠককে অবশ্যই স্বীকার করিতে হইবে, জ্যোতিষিক ব্যাপারগুলির কারণ অনুসন্ধান করিয়া ভবিষ্যদ্বাণী প্রচারের সামর্থ্য মানব কখনই একদিনে পায় নাই। বৎসরের পর বৎসর বহু অনুসন্ধিৎসুকে রাত্রি জাগিয়া জ্যোতিষ্কদিগের গতিবিধি পর্য্যবেক্ষণ করিতে হইয়াছে, কত গণনায় সময়ক্ষেপ করিতে হইয়াছে, কত পরিমাপ করিতে হইয়াছে, তবে তাঁহারা জ্যোতিঃ-শাস্ত্রের প্রতি জনসাধারণের দৃষ্টি আকর্ষণ করিতে পারিয়াছেন।

 অনেকে মনে করেন, কিছুকাল ভাল করিয়া জ্যোতিষ্ক-পর্য্যবেক্ষণে আমরা তাহাদের গতিবিধির মধ্যে যে নিয়ম দেখিতে পাই, ভবিষ্যতে গ্রহ-নক্ষত্রেরা বুঝি সেই নিয়মেই চলে, কাজেই জ্যোতিঃশাস্ত্রটা চরমে জ্যোতিষীদের হাত হইতে গণিতবিশারদদিগের হাতে পড়াই উচিত। এই অবস্থায় গণিতজ্ঞেরাই কেবল কাগজকলমের হিসাবে জ্যোতিষিক ঘটনার কথা বলিয়া দিতে পারিবেন। যাঁহারা বৃহৎ বৃহৎ জ্যোতিষিক আবিষ্কারের ইতিহাস অনুসন্ধান করিয়াছেন, তাঁহাদের নিকট হইতে অবশ্যই এই প্রকার উক্তি আশা করা যায় না। দীর্ঘ পর্য্যবেক্ষণের উপরেই ক্ষুদ্র বৃহৎ সকল জ্যোতিষিক নিয়মই প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু যতই সাবধানে পর্য্যবেক্ষণ করা যাউক না কেন, যন্ত্রের দোষে বা পর্য্যবেক্ষণের