পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৩০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিজ্ঞানে সূক্ষ্মগণনা
২৬৫

অসতর্কতায় একটু আধটু ভ্রম হিসাবের মধ্যে প্রবিষ্ট হওয়া অবশ্যম্ভাবী। প্রারম্ভের এই অবশ্যম্ভাবী ক্ষুদ্র ভ্রম কালক্রমে জমিতে জমিতে এত বৃহৎ হইয়া দাঁড়ায় যে, পূর্ব্বেকার গণনায় যে ফল পাওয়া যাইত, তখন আর তাহা পাওয়া যায় না। গ্রহণের বা অপর কোন ঘটনার কালনিরূপণের জন্য হিসাবে বসিয়া জ্যোতিষিগণ যে ফল লাভ করেন, তখন প্রত্যক্ষদৃষ্ট জ্যোতিষিক ব্যাপারের সহিত তাহার মিল দেখা যায় না। ভুল পর্য্যবেক্ষণ করিয়া নিয়ম আবিষ্কার করার পরে, নিয়মের এই প্রকার স্খলন প্রাচীন জ্যোতিষিগণ পদে পদে প্রত্যক্ষ করিয়াছেন। ইহা হইতে জ্যোতিষিক গণনায় চুল-চেরা হিসাবের প্রয়োজনীয়তা আমরা অনায়াসেই বুঝিতে পারি। গণনার সহিত প্রত্যক্ষদৃষ্ট ঘটনার মিল দেখানোর উপরেই জ্যোতিঃশাস্ত্রের মহিমা প্রতিষ্ঠিত। প্রথম পর্য্যবেক্ষণে ভুল হইলে, এই মিল রক্ষা করিয়া গণনা করা একেবারে অসম্ভব। কাজেই মোটামুটি পর্য্যবেক্ষণের ফলে কোন নিয়মের সন্ধান পাইয়াও জ্যোতিষীরা নিশ্চিন্ত থাকিতে পারেন না; বংশের পর বংশ বৎসরের পর বৎসর এবং রাত্রির পর রাত্রি ইহাদিগকে বার বার জ্যোতিষ্ক-পর্য্যবেক্ষণ ও বড় বড় হিসাবের খাতা লিখিয়া জীবন কাটাইতে হয়; আমাদের ন্যায় ‘অবৈজ্ঞানিক’দিগের নিকটে এই প্রকার চুল-চেরা হিসাবপত্র বাড়াবাড়ি ঠেকিতে পারে, কিন্তু জ্যোতিঃশাস্ত্রের মহিমাটুকু এই বাড়াবাড়ি এবং চুল-চেরা হিসাবের উপরেই সুপ্রতিষ্ঠিত!

 একটা উদাহরণ দিলে আমাদের বক্তব্যটা পরিষ্কার হইবার সম্ভাবনা। পাঠক অবশ্যই কেপ্‌লার সাহেবের আবিষ্কৃত জ্যোতিষিক নিয়মাবলীর কথা শুনিয়াছেন; সাধারণতঃ এগুলি কেপ্‌লারের নিয়ম (Kepler's Laws) নামে সুপরিচিত। যখন নিয়মগুলির প্রথম প্রচার হইয়াছিল, তখন সে গুলিকে অভ্রান্ত বলিয়াই পণ্ডিতগণ গ্রহণ