পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রসায়নীবিদ্যার উন্নতি
২১

 অধিক তাপে ও অধিক ঠাণ্ডায় পদার্থের অবস্থা কি প্রকার হইয়া দাঁড়ায়, তাহা পরীক্ষা করিয়া দেখা অনেক সময় আবশ্যক হয়। কিন্তু পদার্থকে খুব উষ্ণ বা শীতল করিবার উপায় বৈজ্ঞানিকগণ এ পর্য্যন্ত আবিষ্কার করিতে পারেন নাই, কাজেই অনেক পরীক্ষা দুঃসাধ্য বলিয়া পরিত্যক্ত হইয়া আসিতেছিল। বৈদ্যুতিক চুল্লীতে এখন নানা পদার্থকে অনায়াসে তিন হাজার ডিগ্রি পরিমাণে উষ্ণ করা যাইতেছে। এক শত ডিগ্রি তাপে জল ফুটিতে আরম্ভ করে, ইহার তিন শত গুণ তাপ যে কত অধিক তাহা আমরা অনায়াসে অনুমান করিতে পারি। চাপ দিয়া ও শীতল করিয়া বায়ুকে জলের ন্যায় তরল পদার্থে পরিণত করা যাইতেছে। এই তরল বায়ুর ন্যায় শীতল বস্তু এ পর্য্যন্ত দেখা যায় নাই। আজ কাল ইহা দ্বারা নানা পদার্থকে শীতল করিয়া অনেক পরীক্ষাদি হইতেছে।

 হাইড্রোজেন বাষ্পকে যে, কোন কালে তরল করা যাইবে, পূর্ব্বে বৈজ্ঞানিকগণ তাহা কল্পনাই করিতে পারেন নাই। সম্প্রতি ইহাও সুসাধ্য হইয়াছে। তরল হাইড্রোজেনের তাপ, তরল বায়ু আপক্ষাও অনেক কম। উষ্ণতার সীমা সেণ্টিগ্রেডের শূন্য ডিগ্রিতে নামিলে জল বরফে পরিণত হয়। তরল-বায়ুর উষ্ণতা বরফের উষ্ণতা অপেক্ষা কেবল ষাট্ ডিগ্রি মাত্র কম, কিন্তু তরল হাইড্রোজেনের উষ্ণতাকে এখন বরফের তুলনায় ২৫২ ডিগ্রি কম দেখা যাইতেছে। বিজ্ঞানজ্ঞ পাঠক অব্যই জানেন, বৈজ্ঞানিকগণ পদার্থের একটা নিস্তাপ অবস্থা কল্পনা করিয়া থাকেন। উষ্ণতার মাত্রা বরফের শৈতোর ২৭৩ ডিগ্রি নীচে নামিলেই সেই নিস্তাপ অবস্থা আসিয়া পড়ে। ইহাতে পদার্থের অণুর কম্পন রহিত হয় এবং সংকীর্ণ পাত্রে আবদ্ধ রাখিলেও এই অবস্থায় বায়বীয় পদার্থ চাপ-ধর্ম্ম ত্যাগ করে। সুতরাং দেখা যাইতেছে, তরল হাইড্রোজেনের সাহায্যে শীতল করিবার উপায় উদ্ভাবন করিয়া,