পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রসায়নীবিদ্যার উন্নতি
২৫

বিকৃত অবস্থায় থাকে যে, সেগুলিকে ধাতু বলিয়া চিনিয়া লওয়া কঠিন হয়। এই সকল অবিশুদ্ধ ধাতুকে শুদ্ধ করিবার জন্য যে-সকল উপায় প্রচলিত আছে, তাহাদের কোনটিই সহজ বা অল্পব্যয়সাধ্য নয়। স্বর্ণ বা রৌপ্যকে যদি ঠিক স্বর্ণ বা রৌপ্যের আকারেই খনিতে পাওয়া যাইত, তাহা হইলে সেগুলি এত দুর্মূল্য হইয়া দাঁড়াইত না; অনেক স্থলেই জটিল রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় ধাতুকে শুদ্ধ করিতে হয়। গত ত্রিশ বৎসরের চেষ্টায় বিদ্যুতের সাহায্যে যে-সকল শুদ্ধিপ্রথার আবিষ্কার হইয়াছে, তাহা রাসায়ন-শাস্ত্রকে কম উন্নত করে নাই। স্বর্ণ, রৌপ্য ও তাম্র এই তিনটি প্রধান ধাতু হইতে আকরিক যৌগিক পদার্থ আজকাল এত সহজে বিচ্ছিন্ন করা হইতেছে যে, তাহার বিবরণ শুনিলে বিস্মিত হইতে হয়। লৌহ জিনিষটা সুলভ হইলেও ইহাকে বিশুদ্ধ অবস্থায় সংগ্রহ করা বড় কঠিন। অথচ বিশুদ্ধ লৌহের যথেষ্ট প্রয়োজন আছে। সাধারণ লৌহে তার প্রস্তুত করিতে গেলে, যে শ্রম লাগে, বিশুদ্ধ লৌহ লইয়া কার্য করিলে তাহার শতাংশ শ্রমেরও আবশ্যক হয় না। তা ছাড়া বৈদ্যুতিক যন্ত্রাদিতে এই প্রকার লৌহের চুম্বক ব্যবহার করিলে অল্প শক্তিতে অনেক কাজ আদায় করা যাইতে পারে। জর্ম্মানির লিপ্‌জিক্ (Leipsic) নগরের কারখানায় যে বিশুদ্ধ লৌহ প্রস্তুত করা হইতেছে, তাহা দ্বারা আজকাল অনেক যন্ত্রাদি নির্ম্মাণ করিয়া পরীক্ষা চলিতেছে। সাধারণ যন্ত্রের তুলনায় বিশুদ্ধ লৌহনির্ম্মিত কলে প্রায় আড়াই গুণ অধিক কাজ পাওয়া যাইতেছে। ইহা কম লাভের কথা নয়!

 এক সূর্যের তাপই পৃথিবীর সমগ্র শক্তির ভাণ্ডারকে পূর্ণ করিয়া রাখে। যে কয়লা পোড়াইয়া আমরা বাষ্পযন্ত্র বা বিদ্যুতের যন্ত্র চালাইতেছি, তাহা উদ্ভিদের দেহে সঞ্চিত শক্তি ব্যতীত আর কিছুই নয়। উদ্ভিদ আবার অতি প্রাচীন যুগে সেই শক্তি সূর্য্যতাপ হইতে