পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
প্রাকৃতিকী

বিদ্যুতের (Negative Electricity) বাহক, তাহা নিঃসন্দেহে স্থির হইয়া গিয়াছে। কাজেই ধাতুর ভিতরকার ছিদ্রে যে ইলেক্ট্রন আবদ্ধ থাকিয়া চলাফেরা করে, তাহাতে প্রচুর ঋণাত্মক বিদ্যুৎ থাকে। বৈজ্ঞানিকগণ বলিতেছেন, ইলেক্ট্রনের ঋণাত্মক বিদ্যুৎ এবং অণুতে সঞ্চিত ধনাত্মক বিদ্যুৎ (Positive Electricity) পরস্পর টানাটানি করিয়া এমন সাম্যাবস্থায় থাকে যে, আমরা বাহির হইতে ধাতুতে ধন বা ঋণ, কোন বিদ্যুতেরই লক্ষণ দেখিতে পাই না।

 ধাতুমাত্রেই অল্প বা অধিক পরিমাণে যে বিদ্যুৎ পরিবাহন-শক্তি দেখা যায়, ধাতুর মধ্যে আবদ্ধ পূর্ব্বোক্ত ইলেক্ট্রনের সাহায্যে আজকাল তাহার ব্যাখ্যান পাওয়া যাইতেছে। বৈজ্ঞানিকগণ বলিতেছেন, একখণ্ড ধাতুকে বৈদ্যুতিক শক্তির সীমার মধ্যে আনিলে, তাহার ছিদ্র মধ্যবর্ত্তী ইলেক্ট্রনগুলি বৈদ্যুতিক শক্তির দিকে ছুটিয়া চলিতে আরম্ভ করে। ইহাতে ধাতুর মধ্যে যে একটা ইলেক্ট্রনের প্রবাহ উৎপন্ন হয়, তাহাই আমাদের নিকট বিদ্যুতের প্রবাহরূপে ধরা দেয়।

 সঙ্কীর্ণ স্থানে আবদ্ধ বায়ব পদার্থে তাপ প্রয়োগ করিলে, পদার্থটা স্ফীত হইতে চায় এবং পাত্রের গায়ে জোরে চাপ দিতে থাকে। এই ব্যাপারটির কারণ অনুসন্ধান করিয়া স্থির করা হইয়াছে যে, তাপ পাইলেই বায়ব পদার্থের অণুগুলির চঞ্চলতা বাড়িয়া যায়। এই অবস্থায় ইহারা দ্রুতবেগে পরস্পরকে ধাক্কা দিয়া জোরে পাত্রের গায়ে আসিয়া পড়ে, কাজেই চাপের মাত্রা তাপ প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে বাড়িয়াই চলে। তাপ প্রয়োগ করিলে ধাতুর বিদ্যুৎ পরিবাহন-শক্তি কমিয়া আসে; এই সুপরিচিত ব্যাপারটির ব্যাখ্যান দিতে গিয়া বৈজ্ঞানিকগণ তাপবৃদ্ধির সহিত ধাতুমধ্যস্থ ইলেক্ট্রনের গতিবৃদ্ধির কথা প্রচার করিতেছেন। ইলেক্ট্রনগুলি গুরুত্বে ও আয়তনে এত ক্ষুদ্র যে, ইহাদের তিন হাজার ছয় শতটি একত্র না হইলে একটি হাইড্রোজেনের অণুর সহিত সমান