পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধাতুর কয়েকটি গুণ
৩১

অদ্ভুত। ডাল্‌টন সাহেবের আণবিক সিদ্ধান্ত প্রচার হইবার পর হইতে আমরা জানি, পদার্থমাত্রই অতি সূক্ষ্ম অণু দিয়া গঠিত এবং এই অণুগুলি আবার দুই বা ততোধিক আরও সূক্ষ্মতর পরমাণুর যোগে উৎপন্ন। অণুপরমাণুর অস্তিত্ব সম্বন্ধে এত অধিক প্রমাণ সংগ্রহ করা হইয়াছে যে, ডাল্‌টনের সিদ্ধান্তে সন্দেহ করিবার আর কারণ দেখা যাইতেছে না। কিন্তু এত জানা সত্ত্বেও পদার্থে অণুপরমাণু কি প্রকারে বিন্যস্ত থাকে তাহা আমরা নিঃসন্দেহে জানিতে পারি নাই। আধুনিক বৈজ্ঞানিকদিগের গবেষণায় ধাতুর ভিতরকার এই আণবিক অবস্থার অনেক কথা জানা গিয়াছে। ইঁহারা বলিতেছেন, যে ধাতুপিণ্ডটিকে আমরা স্থূল দৃষ্টিতে নিরেট্ দেখিতেছি, তাহা প্রকৃত নিরেট্ নয়; ধাতুর ভিতরে পরমাণুগুলি সুবিন্যস্ত থাকিয়া মৌচাকের মত এক সচ্ছিদ্র পিণ্ডের রচনা করে। পরমাণুর এই প্রকার সুবিন্যাসের সহিত বৈজ্ঞানিকগণ পূর্ব্বেই পরিচিত ছিলেন; গাঢ় চিনির রস জমিয়া যখন দানাদার চিনি বা মিছরি উৎপন্ন করে, তখন ঐ প্রকার আণবিক সুবিন্যাস দেখা যায়। কিন্তু গুরু ধাতুপিণ্ডের ভিতরেও যে, অণুপরমাণু সুসজ্জিত হইয়া দানার উৎপত্তি করে, এবং মধুচক্রের ন্যায় ধাতুপিণ্ডমাত্রই যে সচ্ছিদ্র এই ব্যাপারটি সম্পূর্ণ নুতন। কেবল ইহাই নহে, আধুনিক বৈজ্ঞানিকগণ আরও বলিতেছেন, ধাতুর ভিতরকার সেই সূক্ষ্ম ছিদ্রগুলি ইলেক্ট্রন অর্থাৎ অতিপরমাণুতে পূর্ণ। বায়ব বস্তুর অণু যেমন সর্ব্বদাই চঞ্চল থাকে এবং পরস্পরকে ধাক্কা দিয়া অবিরাম ছুটাছুটি করিতে থাকে, ধাতুর ছিদ্রস্থ ইলেক্ট্রনগুলিও সেই প্রকার চঞ্চল হইয়া চলাফেরা করে। আজ প্রায় বারো বৎসর ধরিয়া নানা দেশের বৈজ্ঞানিকগণ ইলেক্ট্রন্ লইয়া গবেষণা করিতেছেন। রেডিয়ম্ ধাতু হইতে নির্গত ইলেক্ট্রনে বা ক্রুক্‌স্ সাহেবের নলের ভিতরকার ইলেক্ট্রনে ইঁহারা সকল অবস্থাতেই ঋণাত্মক বিদ্যুতের সন্ধান পাইয়াছেন, ইলেক্টন মাত্রেই যে, ঋণাত্মক