পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
প্রাকৃতিকী

বিস্‌মথের দিকে বিদ্যুৎ পরিচালনা করায় সীসকেরই ইলেক্ট্রন্‌ভাণ্ডার ক্রমে শূন্য হইতে থাকে এবং পূর্ব্বে যে স্থানে বহু ইলেক্ট্রন্‌ জড় হইয়াছিল, তাহা এখন শূন্য স্থান পাইয়া ফাঁপিয়া দাঁড়াইতে আরম্ভ করে। আবদ্ধ স্থানের বায়ব বস্তুকে হঠাৎ ফাঁপিয়া উঠিবার অবকাশ দিলে, জিনিষটার তাপ আপনা হইতেই কমিয়া আসে। কাজেই সীসকের ইলেক্ট্রন্‌গুলি পরস্পর বিচ্ছিন্ন হইয়া প্রসারিত হওয়ায় এখানেও তাপের মাত্রা কমিয়া যায়।

 পদার্থের অণুপরমাণুগুলি অতীন্দ্রিয় বস্তু হইলেও বৈজ্ঞানিকগণ নানা কৌশলে তাহাদের আয়তন এবং গুরুত্বাদি নির্ণয় করিয়াছেন। ইলেক্ট্রন্‌-সিদ্ধান্তের সাহায্যে ধাতুর অণুপরমাণুর আয়তনাদি সম্বন্ধে নূতন করিয়া পরিচয় স্থাপনের সুবিধা হইয়াছে। পূর্ব্বে তাপজাত বিদ্যুতের (Thermo-Electricity) উৎপত্তিপ্রসঙ্গে যে ইলেক্ট্রনের প্রবাহের কথা বলা হইয়াছে, তাহার সাহায্যে প্রত্যেক পরমাণুতে কতকগুলি করিয়া মুক্ত ইলেক্ট্রন্ আছে তাহা হিসাব করিয়া নির্ণয় করা হইতেছে। এবং তার পর বিদ্যুৎ পরিবাহনের (Electric Conduction) নব সিদ্ধান্তের সাহায্যে সমবেত ইলেক্ট্রনের সংখ্যা জানিয়া লইয়া ধাতুর কোন নির্দ্দিষ্ট স্থানে কতগুলি পরমাণু রহিয়াছে নির্ণয় করিতে পারিলে প্রত্যেক পরমাণুর আয়তন নির্ণয় করা কঠিন হয় না। কাজেই প্রত্যেক ঘন ইঞ্চ্ স্থানে কতগুলি পরমাণু আছে জানিয়া লইয়া প্রত্যেক পরমাণুর আয়তনও স্থির করা হইতেছে।

 কাচ, জল, বায়ু প্রভৃতি অল্পাধিক পরিমাণে স্বচ্ছ, কিন্তু কোন ধাতুই স্বচ্ছ নয়। ইলেক্ট্রন্‌-সিদ্ধান্ত দ্বারা ধাতুর এই বিশেষ ধর্ম্মটিরও ব্যাখ্যান পাওয়া যাইতেছে। ধাতুর রন্ধ্রস্থ মুক্ত ইলেক্ট্রন্‌ই ধাতুকে অস্বচ্ছ করে বলিয়া বৈজ্ঞানিকগণ সিদ্ধান্ত করিতেছেন। ধাতুর উপরে আলোকপাত হইলেই ইলেক্ট্রন্‌গুলি আলোকতরঙ্গ শোষণ করিয়া লয়।