পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বর্ণচ্ছত্র
৪৩

নানা কারণ উল্লেখ করিয়া গিয়াছেন। কিন্তু প্রাচীন সিদ্ধান্ত ভ্রান্ত বলিয়া প্রমাণিত হওয়ায়, আধুনিক পণ্ডিত-সমাজে ইহা অগ্রাহ্য হইয়াছে এবং গাঢ় পদার্থ অপেক্ষা তরল স্বচ্ছ পদার্থে আলোকের গতি দ্রুত হওয়াই রশ্মিপথ বাঁকিবার একমাত্র কারণ বলিয়া আজ কাল নির্দ্দিষ্ট হইয়া থাকে।

 এতদ্ব্যতীত আলোক-পথের পরিবর্ত্তনে আরো দুই একটি ঘটনা দেখিতে পাওয়া যায়। রশ্মিপুঞ্জ পদার্থদ্বয়ের সন্ধিতল ঠিক লম্বভাবে ভেদ করিয়া পদার্থান্তরে প্রবিষ্ট হইলে ইহার পথের কোনই পরিবর্ত্তন হয় না, যে সকল রশ্মি তির্য্যগ্‌ভাবে প্রবিষ্ট হয় তাহাদেরই কেবল পথ পরিবর্ত্তন হইয়া থাকে। পূর্ব্বেই বলা হইয়াছে, পদার্থান্তরে প্রবেশ দ্বারা আলোকের গতি পরিবর্ত্তিত হয় বলিয়া আলোক-পথেরও পরিবর্ত্তন হয়। আলোকরশ্মিমাত্রেই এই নিয়মের অধীন, কিন্তু পদার্থান্তরে প্রবেশকালে লম্ব রশ্মিপুঞ্জস্থ প্রত্যেক রশ্মির গতি এককালে পরিবর্ত্তিত হয় বলিয়া আলোক-পথের পরিবর্ত্তন দেখা যায় না। কিন্তু রশ্মিসকল তির্যগ্‌ভাবে প্রবেশ করিলে আলোকতরঙ্গের সকল অংশ এক কালে ভিন্ন পদার্থে প্রবেশ করে না। তরঙ্গের যে অংশ প্রথম সন্ধিতল স্পৃষ্ট হয়, তাহাই কেবল পৃথক্ গতিতে চলিতে থাকে এবং কিছুকালের জন্য তরঙ্গের অবশিষ্টাংশের গতি পূর্ব্ববৎ থাকিয়া যায়। এই প্রকারে একই আলোকতরঙ্গের বিভিন্নাংশ যুগপৎ ধীর ও দ্রুত গতিতে চলে বলিয়া, সমগ্র তরঙ্গ ঐ পদার্থ মধ্যে প্রবিষ্ট হইলে পূর্ব্বের গতিবৈচিত্র হেতু আলোকতরঙ্গ ভিন্নপথাবলম্বী হয়, এবং ইহারই ফলে পথ-পরিবর্ত্তন সাধিত হয়।

 আলোক-পথপরিবর্ত্তন বুঝিবার জন্য, প্রায় সকল বিজ্ঞানগ্রন্থেই একটি সুন্দর উদাহরণ দেখা যায়। এটি বুঝিলে বিষয়টি অপেক্ষাকৃত সহজবোধ্য হইতে পারে। ইহাতে রশ্মিসকল একদল চলিষ্ণু সৈন্যের