পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নূতন বিশ্লেষণ-প্রথা
৪৭

বর্ণসকল অবিচ্ছিন্নভাবে পর পর সজ্জিত থাকে, তাহাদিগকে এক শ্রেণীর অর্ন্তভুত করা হয়। পরীক্ষা দ্বারা দেখা গিয়াছে, কঠিন ও তরল পদার্থ প্রজ্জ্বালিত করিলে, তজ্জাত আলোক দ্বারা সাধারণতঃ এই অবিচ্ছিন্ন বর্ণচ্ছত্রের বিকাশ হয়। দ্বিতীয় শ্রেণীর বর্ণচ্ছত্রে বিশ্লিষ্ট-বর্ণগুলির উজ্জ্বলতা সমান থাকে না, এজন্য ইহাতে বর্ণসকল বিচ্ছিন্নভাবে প্রকাশিত দেখা যায়;—সৌরবর্ণচ্ছত্র এই শ্রেণীর অন্তর্ভুত, ইহার সর্ব্বাংশ কৃষ্ণরেখা পরিব্যাপ্ত থাকে বলিয়া, পূর্ব্বাপর বর্ণগুলির মধ্যে ব্যবধান থাকিয়া যায়, কাজেই ইহা প্রথম শ্রেণীর বর্ণচ্ছত্রের ন্যায় অবিচ্ছিন্ন হইতে পারে না। বৈজ্ঞানিকগণ বলেন,—এই শ্রেণীর বর্ণচ্ছত্রোৎপাদক আলোক হইতে কোন প্রকারে কতকগুলি মৌলিক বর্ণরশ্মি লয়প্রাপ্ত হইলে বর্ণচ্ছত্রে লুপ্তবর্ণ সকল প্রকাশিত হয় না, কাজেই ইহাদের স্থান শূন্য পড়িয়া থাকে। এই শূন্যস্থানই সৌরবর্ণচ্ছত্রে কৃষ্ণরেখাকারে প্রকাশিত থাকে। তৃতীয় শ্রেণীর বর্ণচ্ছত্রেও অবিচ্ছিন্ন বর্ণের সমাবেশ দেখা যায় না, ইহাতে কেবল মধ্যে মধ্যে কয়েকটি স্থূল ও উজ্জ্বল বর্ণরেখা দৃষ্ট হয় মাত্র; যে-সকল রশ্মি কেবল দুই বা ততোধিক মৌলিকবর্ণ সংমিশ্রণে উৎপন্ন হয়, তাহাদের বিশ্লেষণে, এই শেষোক্ত বর্ণচ্ছত্র রচিত হইয়া থাকে,—প্রজ্বলিত বাষ্পজাত আলোকের এই বর্ণচ্ছত্রই প্রধান লক্ষণ।

 নিউটনের বর্ণবিশ্লেষণ প্রক্রিয়া আবিষ্কারের পর বর্ণচ্ছত্র লইয়া বৈজ্ঞানিক মহলে কিছুদিন বেশ আন্দোলন চলিয়াছিল, কিন্তু ইহা দ্বারা কোন নূতন তথ্য প্রকাশ পায় নাই। নিউটনের আবিষ্কারের অনেক পরে ১৭৫২ খৃষ্টাব্দে, টমাস মেল্‌ভিল্ নামক জনৈক কৃতবিদ্য যুবক নিউটন-প্রদর্শিত পথে বর্ণচ্ছত্রের নূতন গবেষণায় নিযুক্ত হন; সৌভাগ্যের বিষয়, সমসাময়িক অপর বৈজ্ঞানিকদিগের ন্যায় মেল্‌ভিলের অনুসন্ধান ও যত্ন বিফল হয় নাই,—দাহ্য পদার্থভেদে যে দীপালোকের নানা