পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নূতন বিশ্লেষণ-প্রথা
৫১

স্থানে উক্ত রেখাসকল প্রকাশিত দেখা যায়; কাজেই বর্ণচ্ছত্রস্থ এই স্থির বর্ণরেখাগুলি পরিদর্শন করিয়া, অনায়াসেই অতি জটিল পদার্থের গঠনোপাদানও নির্দ্দেশ করা যাইতে পারে। সোডিয়ম্ পোটাসিয়ম্ প্রভৃতি কয়েকটি ধাতু সাধারণ দীপশিখায় সহজেই বাষ্পীভূত ও প্রজ্বলিত হয়, এজন্য ইহাদের বর্ণচ্ছত্র অতি সহজেই প্রাপ্ত হওয়া যায়, কিন্তু অপর পদার্থ অল্পতাপে বাষ্পীভূত ও প্রজ্বলিত করা অতি কষ্টসাধ্য এবং অনেক সময়ে অসাধ্য বলিয়া বিবেচিত হওয়ায় এ পর্য্যন্ত সাধারণ বিশ্লেষণকার্য্যে বর্ণচ্ছত্র ব্যবহৃত হইত না। কিন্তু আজ কাল বৈদ্যুতিক প্রবাহ ও অগ্নি-হাইড্রোজেন দীপশিখার সাহায্যে এই সকল কার্য্য সম্পন্ন হইতেছে, এজন্য এই অভিনব বিশ্লেষণপ্রথা সর্ব্বাপেক্ষা সরল বলিয়া আদৃত হইতেছে। কেবল বিদ্যুৎপ্রবাহ দ্বারা, আজকাল সকল ধাতুই বাষ্পীভূত হইতেছে।

 বর্ণচ্ছত্র দ্বারা কেবল যে, পদার্থ বিশ্লেষণের সুযোগ হইয়াছে তাহা নয়, গত পঞ্চাশৎ বৎসরের মধ্যে, ইহা দ্বারা কয়েকটি নূতন ধাতুও আবিষ্কৃত হইয়াছে। পোটাসিয়ম ইত্যাদি কয়েকটি ধাতুর বর্ণচ্ছত্রে ইহাদের বর্ণরেখা নিরূপণকালে জগদ্বিখ্যাত জর্ম্মানপণ্ডিত বুন্‌সেন্‌ দুইটি নূতন ধাতু আবিষ্কার করেন। পোটাসিয়মের বর্ণচ্ছত্রের বর্ণরেখার পার্শ্বে অপর একটি অদৃষ্টপূর্ব্ব বর্ণরেখা দেখিয়া নিশ্চয়ই ইহা কোন বিজাতীয় পদার্থ যোগে উৎপন্ন হইয়াছে স্থির করিয়া বুন্‌সেন্‌ এই বর্ণোৎপাদক পদার্থটিকে পৃথক করিবার চেষ্টা করেন, এবং ইঁহার এই চেষ্টার ফলে রুবিডিয়ম্ ও সিজিয়ম্ নামক দুইটি নূতন ধাতুর আবিষ্কার হয়। এই ঘটনার কিছুদিন পরে বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক ক্রুক্‌স্ কোন একটি যৌগিক পদার্থের বর্ণচ্ছত্র পরীক্ষাকালে বর্ণচ্ছত্রে একটি অত্যুজ্জ্বল নীলরেখা দেখিয়াছিলেন এবং ইহা পরিজ্ঞাত কোন মৌলিক পদার্থজাত হইতে পারে না বুঝিয়া সম্ভবতঃ ইহা একটি নূতন পদার্থের অস্তিত্বজ্ঞাপক