পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
প্রাকৃতিকী

হইতে প্রত্যক্ষ করিয়া, বর্ণচ্ছত্র দ্বারা বিশ্লেষণ কার্য্য সম্ভবপর বলিয়া, এই বৈজ্ঞানিকদ্বয়ই সর্ব্বপ্রথম অনুমান করেন। এতদ্ব্যতীত প্রত্যেক বাষ্পের নির্দ্দিষ্ট রশ্মিহরণক্ষমতা প্রত্যক্ষ করিয়া, সৌর বর্ণচ্ছত্রস্থ কৃষ্ণরেখা উৎপাদনের প্রকৃত কারণের আভাষ, ইঁহারাই সর্ব্বপ্রথমে জগতে প্রচারিত করেন।

 হার্সেল এবং ব্রুষ্টারের পরীক্ষার ফল প্রচারিত হইলে, ১৮২৬ খৃষ্টাব্দে, সুপ্রসিদ্ধ রসায়নবিৎ ফক্স ট্যাল্‌বট্ উক্ত বৈজ্ঞানিকদ্বয়ের আবিষ্কারের সমালোচনা করিয়া একখানি পুস্তিকা রচনা করেন। বৈজ্ঞানিকদিগের মতে, ট্যাল্‌বটের এই ক্ষুদ্র গ্রন্থখানি, প্রাচীন বিজ্ঞান ভাণ্ডারের একটি অমূল্য রত্ন,— এই ক্ষুদ্র পুস্তিকা দ্বারাই আধুনিক বর্ণচ্ছত্রীয় বিশ্লেষণপ্রথার মূলভিত্তি স্থাপিত হয়। গ্রন্থকার একস্থানে স্পষ্টই লিখিয়াছেন,—জটিল রাসায়নিক পদার্থ প্রজ্বালিত করিয়া, কেবল বর্ণচ্ছত্র পরীক্ষা দ্বারা ইহার গঠনোপাদান অতি সূক্ষ্মভাবে স্থির করিতে পারা যায়। এই সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ কার্য্য অপর রাসায়নিক প্রক্রিয়া দ্বারা কিছুতেই সম্ভবপর নয়। সকল বর্ণচ্ছত্রে সোডিয়ম্ জাত উজ্জ্বল পীতরেখা দেখিয়া পীতরেখা-উৎপাদক পদার্থটির আবিষ্কারার্থে ট্যাল্‌বট্ নানা পরীক্ষায় নিযুক্ত হইয়াছিলেন, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ ইহাতে কৃতকার্য্য হন নাই। প্রায় সকল পদার্থেই অল্পাধিক পরিমাণে জল আছে দেখিয়া জলই পীতবর্ণোৎপাদক পদার্থ বলিয়া স্থির করেন এবং অপর এক সময়ে লোহিতালোকজাত বর্ণচ্ছত্রে অত্যুজ্জ্বল পীতরেখা দেখিয়া, গন্ধকই ইহার কারণ বিবেচনা করেন।

 এখন পূর্ব্ববর্ণিত প্রাচীন ও আধুনিক পণ্ডিতগণের নানা পরীক্ষাদি দ্বারা দেখা যাইতেছে পদার্থমাত্রই তাপসংযোগে বাষ্পীভূত ও প্রজ্বলিত হইলে, ইহাদের বর্ণচ্ছত্রে এক একটি নির্দ্দিষ্ট বর্ণের রেখা দৃষ্ট হয় এবং পদার্থটির অস্তিত্ব থাকিলে সকল্‌ সময়েই বর্ণচ্ছত্রের এক একটি নির্দ্দিষ্ট