পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নূতন বিশ্লেষণ-প্রথা
৫৩

বর্ণের অপর দুই একটি রেখা দৃষ্ট হয়। চাপ ও তাপ দ্বারা বর্ণচ্ছত্রের এই পরিবর্ত্তনে, পরীক্ষায় নানা গোলযোগ উপস্থিত করে; কারণ, অবিচ্ছিন্ন উজ্জ্বল বর্ণচ্ছত্র, জ্বলন্ত কঠিন পদার্থজাত বলিয়া সাধারণতঃ স্থিরীকৃত হয় বটে, কিন্তু বাষ্পজাত বিচ্ছিন্ন বর্ণচ্ছত্রস্থ বর্ণরেখাগুলিকেও প্রচুর উত্তাপ ও চাপ সাহায্যে বিস্তৃত করিয়া, কঠিন পদার্থের বর্ণচ্ছত্রের অনুরূপ অবিচ্ছিন্ন করিতে পারা যায়। এজন বর্ণচ্ছত্রের বিশ্লেষণ কালে বর্ণরেখাগুলির পরস্পর ব্যবধান অতি সতর্কতার সহিত পরীক্ষা করিতে হয় এবং পরীক্ষাধীন পদার্থটিকে উপযুক্ত তাপ সংযোগে অতি সাবধানে প্রজ্বালিত করিতে হয়!

 এই ত গেল বিচ্ছিন্ন বাষ্পীয় বর্ণচ্ছত্রের কথা। কৃষ্ণরেখাময় সৌর বর্ণচ্ছত্র দ্বারাও, রাসায়নিক বিশ্লেষণ অতি সূক্ষ্মরূপে সুসম্পাদিত হইয়া থাকে। পূর্ব্বে বলা হইয়াছে, শুভ্রালোকস্থ সমবেত বিবিধ বর্ণরশ্মি সূর্য্যমণ্ডল হইতে পৃথিবীতে আগমনকালে কিঞ্চিৎ পরিবর্ত্তিত হয়, এবং কতকগুলি রশ্মি কোন প্রকারে এককালে লোপ পাইয়া থাকে;—এই জন্যই সৌরবর্ণচ্ছত্রে লুপ্তবর্ণের স্থানে কৃষ্ণরেখা প্রকাশিত হয়। এই লুপ্তরশ্মি-আলোকের বর্ণচ্ছত্র দ্বারা, অনেক সময়ে সহজে তরলপদার্থের নির্ম্মাণোপাদান নির্দ্দিষ্ট হইয়া থাকে। বিজ্ঞানানুরাগী পাঠকপাঠিকাগণ বোধ হয় অবগত আছেন,— আমরা সচরাচর যে-সকল পদার্থ প্রত্যক্ষ করি, তাহারা তাহাদের বর্ণ সূর্য্যালোক হইতেই পাইয়া থাকে। শুভ্রালোক ঐ সকল পদার্থে পতিত হইলে, প্রাকৃতিক ধর্ম্মানুসারে ইহার। আলোকস্থ কতকগুলি বর্ণরশ্মি হরণ করে ও হৃতাবশিষ্ট রশ্মিগুলি প্রতিফলিত করে,—এই প্রতিফলিত রশ্মি দ্বারা আমরা পদার্থগণকে তত্তৎবর্ণবিশিষ্ট দেখিতে পাই। এই ত গেল সাধারণ পদার্থের বর্ণের কথা। স্বচ্ছ পদার্থসকলও পূর্ব্বোক্ত প্রকারে বর্ণবিশিষ্ট হইয়া থাকে,—ইহাতে কেবল লুপ্তাবশিষ্ট রশ্মিগুলি প্রতিফলিত না হইয়া, পদার্থের