পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
প্রাকৃতিকী

মধ্য দিয়া নির্ব্বিঘ্নে বহির্গত হইয়া, ইহাদিগকে রঞ্জিত করে। বর্ণচ্ছত্র সাহায্যে কোন তরল পদার্থের প্রকৃতি নির্ণয় করিতে হইলে, ইহার মধ্য দিয়া অবিশ্লিষ্ট রশ্মিগুচ্ছ আনয়ন করিয়া, পরে পূর্ব্ববর্ণিত সাধারণ উপায়ে বর্ণচ্ছত্র উৎপন্ন করিতে হয়, পরে এই বর্ণচ্ছত্র পরীক্ষা দ্বারা পদার্থটির উপাদান স্থির করিতে হয়। এই প্রকার বর্ণচ্ছত্রের একটি প্রধান লক্ষণ এই যে, তরল পদার্থের মধ্য দিয়া আগমনকালে সাধারণ সৌর বর্ণরশ্মিগুচ্ছের কতকগুলি, পদার্থটির প্রকৃতি অনুসারে লোপ প্রাপ্ত হয়; কাজেই এই লুপ্তরশ্মির আলোক দ্বারা যে বর্ণচ্ছত্র রচিত হয়, তাহাতে সৌর বর্ণচ্ছত্রস্থ স্থিররেখাগুলি ব্যতীত আরো কয়েকটি নূতন কৃষ্ণরেখা প্রকাশিত হয়। এই নূতন রেখাগুলির স্থান বর্ণচ্ছত্রের কোন্ কোন্ অংশে অবস্থিত, এবং কোন্ কোন্ মৌলিক পদার্থ দ্বারা উক্ত বর্ণলুপ্ত রেখা সকল উৎপন্ন হয় তাহা স্থির করিলে, তরল পদার্থটির উপাদান অনায়াসেই স্থির করিতে পারা যায়।

 আজকাল পূর্ব্ববর্ণিত উপায়ে, সকল জৈব ও ধাতব পদার্থের বিশ্লেষণকার্য্য সম্পন্ন হইতেছে। যে-সকল জৈব পদার্থ জটিলতার জন্য এ পর্য্যন্ত অবিশ্লিষ্ট অবস্থায় ছিল, বর্ণচ্ছত্র সাহায্যে এখন তাহার অতি ক্ষুদ্র উপাদানও, অতি সহজে আবিষ্কৃত হইতেছে। এতদ্ব্যতীত সন্দেহজনক মৃত্যুতে মৃতব্যক্তির পাকাশয়স্থ পদার্থের বিশ্লেষণ অসম্ভব হইলে, কেবল বর্ণচ্ছত্র পরীক্ষা দ্বারা অনেক সময়ে বিষাক্ত পদার্থের চিহ্ন আবিষ্কৃত হইতে দেখা গিয়াছে। অল্পদিন হইল, হপ্‌সেলার নামক জনৈক বিজ্ঞানবিৎ, নরশোণিতের বর্ণচ্ছত্র উৎপাদন করিয়াছেন এবং শোণিত বিষসংযুক্ত হইলে, বর্ণচ্ছত্রের কি প্রকার পরিবর্ত্তন হয় তাহাও দেখাইয়াছেন। হপ্‌সেলারের এই আবিষ্কার দ্বারা, বিকৃতশোণিত ব্যক্তির রক্ত কি বিষে দূষিত হইয়াছে, তাহা অল্পায়াসেই স্থিরীকৃত হইতেছে। আজকাল আবার অধ্যাপক সর্লিপ্রমুখ কয়েকটি