পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অদৃশ্য কিরণ
৫৯

অশেষ, বিশেষতঃ রশ্মিনির্ব্বাচনকার্য্যে ইহার ন্যায় কার্য্যোপযোগী উপায় দুষ্প্রাপ্য। ফোটোগ্রাফের কাচের পূর্ব্বোক্ত বর্ণচ্ছত্র অঙ্কনশক্তি আবিষ্কৃত হওয়ার পরও, সর্ব্বাঙ্গসুন্দর বর্ণচ্ছত্র উৎপাদনের সহজ উপায় পরিজ্ঞাত না থাকায়; অনেক দিন অবধি অদৃশ্য কিরণ সম্বন্ধে কোন আবিষ্কারের কথা শুনা যায় নাই। ১৮৫২ অব্দে নান। পদার্থের রশ্মিহরণ শক্তি (Power of Absorption) পরীক্ষাকালে, অধ্যাপক ষ্টোক্স্ (Stokes) অদৃশ্যালোক নির্ব্বাচনে কোয়ার্টজ্ নামক বালুকা প্রস্তরের (Quartz) উপযোগিতা আবিষ্কার করেন। সাধারণ কাচের পরকলায় (Lens) মধ্য দিয়া আলোক আনিলে অধিকাংশ অদৃশ্যালোকরশ্মিই, কাচ দ্বারা হৃত হয়, কাজেই সেই আলোকজাত বর্ণচ্ছত্রে অদৃশ্যকিরণের পরিমাণ অতি অল্পই থাকে,—কিন্তু উক্ত প্রস্তর নির্ম্মিত পরকলার সাহায্যে বর্ণচ্ছত্র পাতিত করিলে, ইহার মধ্য দিয়া সকল বর্ণরশ্মিই অক্ষত ও অলুপ্তভাবে বহির্গত হইয়া সর্ব্বাঙ্গসুন্দর পূর্ণ বর্ণচ্ছত্র বিকাশ করে। ষ্টোক্স্ সাহেব আলোক পরীক্ষার এই সুযোগ পাইয়া পূর্ব্বোক্ত বালুকা প্রস্তর সাহায্যে অল্পায়াসেই ঈপ্সিত বর্ণচ্ছত্র রচনা করিয়াছিলেন এবং ফোটোগ্রাফির দ্বারা ইহার অনেকগুলি ছবি তুলিয়া রাখিয়াছিলেন। ষ্টোক্স্ সাহেবের এই পরীক্ষা দ্বারা অদৃশ্যালোকরশ্মি সম্বন্ধে নানা রহস্য প্রকাশিত হইয়াছিল। ইনি বৈদ্যুতিক বর্ণচ্ছত্রের যে ছবি তুলিয়াছিলেন, তাহাতে অদৃশ্যালোকরশ্মি এত অধিক ছিল যে, কেবল তাহারই বর্ণচ্ছত্র, দৈর্ঘ্যে দৃশ্যমান সাধারণ বর্ণচ্ছত্রের প্রায় সাত গুণ হইতে দেখা গিয়াছিল।

 এই অদৃশ্যালোকের প্রকৃত বর্ণ কি, তাহা আমাদের জ্ঞানাতীত। অসম্পুর্ণ মানবদৃষ্টি উক্ত আলোক-উৎপাদক কম্পন কোনক্রমেই অনুভব করিতে পারে না। ভায়লেটের অপর পার্শ্বস্থ অদৃৎ-কিরণের রাসায়নিক শক্তি অত্যন্ত প্রবল এবং এই শক্তিই আলোকের একমাত্র