পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
প্রাকৃতিকী

অস্তিত্বজ্ঞাপক। ফোটোগ্রাফের কাচ, এই আলোকে উন্মুক্ত রাখিলে তৎক্ষণাৎ বিকৃতাবস্থা প্রাপ্ত হয়; কাচের এই বিকৃতি দেখিয়া আমরা অদৃশ্যালোকের অস্তিত্ব জানিতে পারি।

 আজকাল যে প্রণালীতে ফোটোগ্রাফের ছবি তোলা হইয়া থাকে, পূর্ব্ব-বর্ণিত অদৃশ্যালোকই তাহার মূল অবলম্বন। লেন্‌স্ দ্বারা ক্যামেরার মধ্যস্থ কাচের পর্‌দায় ছায়ালোকময় যে ছবি হয়, তাহার আলোকাংশে দৃশ্যমান আলোকের সহিত অদৃশ্যালোকই মিশ্রিত থাকে। এই শেষোক্ত আলোক, ইহার স্বাভাবিক রাসায়নিকশক্তি প্রভাবে, পর্‌দাসংলগ্ন ফোটোগ্রাফিক্ কাচ বিকৃত করিয়া ফেলে, কিন্তু কাচের ছায়াহীন অংশটি আলোকাভাবে পূর্ব্বাবস্থাতেই থাকিয়া যায়। ইহার পর, অপর প্রক্রিয়াদ্বারা উক্ত কাচের অবিকৃত অংশটি, বিকৃত আলোকাস্পৃষ্ট অংশ হইতে স্পষ্টতঃ পৃথক করিলে ছবি ফুটাইয়া তোলা হইয়া থাকে।

 এই ত গেল ভায়লেটের পরবর্ত্তী অদৃশ্য-কিরণের কথা। বর্ণচ্ছত্রের লোহিতপ্রান্তস্থ অদৃশ্য কিরণের প্রকৃতি, আবার সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। এই অদৃশ্যরশ্মির অস্তিত্ব কেবল তাপ দ্বারা আবিষ্কৃত হইয়াছিল,—কাজেই তাপ পরীক্ষাই এই রশ্মিজাত বর্ণচ্ছত্রের বিস্তৃতি প্রকৃতি ইত্যাদি নির্দ্ধারণের একমাত্র উপায়; কিন্তু এই বর্ণচ্ছত্র পরীক্ষার উপযোগী অতি সূক্ষ্ম তাপমান যন্ত্র এ পর্য্যন্ত নির্ম্মিত না হওয়ায়, ইহার প্রকৃত রহস্য চিরান্ধকারাচ্ছন্ন রহিয়া গিয়াছে। পূর্ব্ববর্ণিত অদৃশ্য কিরণের ন্যায় ইহাতে রাসায়নিক শক্তির চিহ্নমাত্র দেখা যায় না, এজন্য ইহার প্রকৃতি স্থিরীকরণকার্য্যে ফোটোগ্রাফের কাচের ন্যায় কোন রাসায়নিক পদার্থও বিশেষ উপযোগী হইতেছে না। এই অদৃশ্যালোকের প্রকৃতি নির্দ্ধারণব্যাপারে, এই প্রকার নানা গোলযোগ থাকায় অনেক দিন অবধি বৈজ্ঞানিকগণের মধ্যে কেহই বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করিতে সাহসী হন নাই।