পাতা:প্রাকৃতিকী.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ডপ্‌লার সাহেবের সিদ্ধান্ত
৬৭

 যাহা হউক মনে করা যাউক, যেন আমরা রশ্মি-নির্বাচন যন্ত্র (Spectroscope) দ্বারা কোন দূর নক্ষত্রের আলোক পরীক্ষা করিতেছি। জ্যোতিষ্কটি যদি আমাদের যুবক সূর্য্যের মত হয়, অর্থাৎ ইহার দেহ যদি জ্বলন্ত কঠিন তরল ও বায়বীয় পদার্থের মিশ্রণে প্রস্তুত হইয়া থাকে, তাহা হইলে রক্তপীত হরিৎনীল প্রভৃতি বর্ণ গায়ে গায়ে লাগানো এক অখণ্ড বর্ণচ্ছত্র প্রকাশ হইয়া পড়িবে। জ্যোতিষ্কটি যদি বয়সে সূর্য্যের ছোট হয়, অর্থাৎ যদি এখনো বাষ্পাকারে থাকিয়া উহা আলোক বিতরণ করিতে থাকে, তাহা হইলে বর্ণচ্ছত্র খণ্ডিত হইয়া দেখা দিবে। ইহাতে তখন লাল, নীল ইত্যাদি বর্ণের স্থানে কতকগুলি স্থূল বর্ণরেখা ব্যতীত আর কিছুই দেখা যাইবে না। যদি কেবল হাইড্রোজেন্ পোড়াইয়াই জ্যোতিষ্কটি দীপ্তিশালী হইয়া থাকে তবে, তাহা হাইড্রোজেনেরই বর্ণচ্ছত্র প্রকাশ করিতে থাকিবে। যাহা হউক মনে করা যাউক, এই শেষোক্ত শ্রেণীর জ্বলন্ত বাষ্পময় একটি জ্যোতিষ্ক ভীমবেগে আমাদের দিকে অগ্রসর হইতেছে এবং সেই সময়ে আমরা উহার আলোকের বর্ণচ্ছত্র পরীক্ষা করিতেছি। আমরা পূর্ব্বে দেখিয়াছি, কোন বস্তু নিশ্চল থাকিয়া যে আলোকে আত্মপ্রকাশ করে, তাহাই দশকের দিকে ছুটিয়া আসিতে থাকিলে অপর আলোক দেখাইতে আরম্ভ করে। কারণ নিশ্চল অবস্থায় যতগুলি ঈথর-তরঙ্গ দ্রষ্টার চক্ষে আঘাত দেয়, ছুটিয়া অগ্রসর হওয়ায় তাহা অপেক্ষা অনেক অধিক তরঙ্গ চক্ষে আসিয়া পড়ে। আমাদের চক্ষু এই তরঙ্গমাত্রার পার্থক্য ধরিতে পারে না, কিন্তু রশ্মি-নির্ব্বাচন যন্ত্রকে ফাঁকি দেওয়া চলে না। জ্যোতিষীরা পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছেন, আমাদের উদাহৃত সেই রেলের গাড়ি কাছে ছুটিয়া আসিলে যেমন তাহার মোটা সুরটা মিহি হইয়া দাঁড়ায়, এখানেও ঠিক্ সেই রকমে জ্যোতিষ্কের বর্ণচ্ছত্রস্থ নীচু রঙ্‌গুলি ক্রমে উঁচু হইয়া দাঁড়ায়। অর্থাৎ বর্ণচ্ছত্রে যদি কেবল নীল বা পীত রেখা থাকে, তবে সেগুলি