পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२० প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান অসাধ্য সাধন করিয়াছিলেন । এই বঙ্গদেশে এখন যেমন বৈষ্ণব ভিখারীর! ‘জয় চৈতন্ত হাক ছাড়িয়া ভিক্ষা করে, পঞ্চদশ শতাব্দী পর্য্যন্ত নাথ-যোগীর। গোরক্ষনাথের নাম লইয়৷ সেইরূপভাবে ভিক্ষা করিতেন। “গোরখ জাগাই, শিঙ্গা ধ্বনি গুনইতে জটিল ভিকৃ আনি দিল । মৌনী যোগীশ্বর মাথা হিলায়ত বুঝিলু ভিক্‌ নাহি নেল ”* মীননাথ, গোরক্ষনাথ, চৌরঙ্গীনাথ, কপটিনাথ ও বিন্দুনাথ এবং ৮৪ সিদ্ধাকে লইয়া যে বৃহৎ নাথ-পরিবার গঠিত হইয়াছিল, ইহারাই উত্তরকালোনাথ-গুরু’নামে বাঙ্গালার জনসাধারণের উপর অখণ্ড অধিকার স্থাপন করিয়াছিলেন । “গোরক্ষ-বিজয়’ বহু পূৰ্ব্বে বাঙ্গলায় লিখিত হইয়াছিল, কিন্তু পঞ্চদশ শতাব্দীতে ফয়জুল্লাহু ও ভবাণী দাস ইহার যে পরিবর্তিত সংস্করণ প্রকাশ করেন তাহাই ‘বঙ্গীয় সাহিত্য-পরিষদ’ হইতে প্রকাশিত হইয়াছে। “গোরক্ষ বিজয়’-এ শিবের প্রাধান্ত স্বীকৃত হইলেও ইহার অস্থিপঞ্জর বৌদ্ধ-তন্ত্র । এই সঙ্গে রামাই পণ্ডিত ও ময়ুর ভট্টের নামও উল্লেখযোগ্য। ইহার ধৰ্ম্ম-ঠাকুরের পূজা বাঙ্গালা দেশে প্রচার করিতেছিলেন । নানা শ্রেণীর সহজিয়া মত ইহাদিগকে আশ্রয় করিয়া এদেশে পুষ্ট হইতেছিল। এই সহজিয়াদের আদি বহু প্রাচীন, খৃষ্ট জন্মিবার তিনশত বৎসর পূৰ্ব্বেও সহজিয়ারা বিদ্যমান ছিলেন। পালি 'কথা-বথু নামক পুস্তকে তাহার আভাস আছে। এক শ্রেণীর বৌদ্ধ একাভিপ্লায়ী” নামে নিজদিগকে পরিচয় দিয়া স্ত্রী-পুরুষে গোপনে ধৰ্ম্ম-চর্চা করিত। ইহারাই কিশোরী-ভজন প্রভৃতি সহজিয়াদের পদ্ধতির স্বষ্টি-কর্তা বলিয়া মনে হয়। খৃষ্টীয় দশম শতাব্দীতে তিব্বতের রাজা লাঃনামা ইয়সি হোত সম্ভবতঃ এই দলের ব্যাভিচারে ক্ষুণ্ণ হইয়াছিলেন । ইহার নীল আলখাল্লা পরিধান

  • গোবিন্দ দাসের পদ দ্রষ্টব্য