Ե 8 প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান বক্ষে সহানুভূতি ছিল সাগরোপম, যাহার চক্ষু ছিল ব্যোম-বিহারী শ্যেন পক্ষীর স্তায় তীক্ষ ও জ্যোতিষ্মান, সেই আশুতোষ মুখোপাধ্যায় আদর করিয়া ইহাদের মুদ্রাঙ্কনের ব্যবস্থা করিয়াছিলেন এবং আমাদের শতনিন্দিত ইংরেজ রাজ-পুরুষেরাই এই মুদ্রাঙ্কনের আংশিক ব্যয়ভার বহন করিতে সন্মত হইয়াছিলেন । আজ পর্য্যস্ত কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ৫৪টি পল্লী-গীতিক প্রকাশ করিয়াছেন, প্রায় ৫০০ রয়েল সাইজের পাতায় এক এক খণ্ড প্রকাশিত হইয়াছে। এইভাবে চারিখণ্ডে মূল এবং আর চারিখণ্ডে সম্পাদক-কৃত ইংরেজী অনুবাদ বাহির হইয়াছে। মোট রয়েল সাইজের ১৬৪৩ পৃষ্ঠা বাঙ্গলা এবং ১৯৭৮ পৃষ্ঠা ইংরেজী, একুনে ৩৬২১ পৃষ্ঠায় আট খণ্ডে পল্লী-গীতিকাগুলি প্রকাশিত হইয়াছে। প্রথম খণ্ডের ভূমিকা মাকুইস অব জেটুল্যাণ্ড লিখিয়া দিয়াছেন। কিন্তু এই সংগ্রহে পল্লী-সাহিত্য শেষ হইয়া যায় নাই, যতটা দেখিতেছি এইগুলির শেষ ধারণা করিতে পারিতেছি না। এই সাহিত্য এত বিরাট যে, ইহাদের উদ্ধার করা কেবল ব্যয়সাপেক্ষ নহে, বহু প্রকৃত দরদী লোকের সহায়তাসাপেক্ষ। আজ এই সম্বন্ধে যাহা লিখিব—তাহ শুধু প্রকাশিত ৫৪টি কাব্য লইয়। নহে, এই ক্ষেত্রে যে আরও বহু - উপকরণ আমি সংগ্ৰহ করিয়াছি, তাহাও এই সন্দর্ভের প্রতিপাদ্য বিযয় হইবে। এই বিপুল সাহিত্যের অধিকাংশই আমি পূৰ্ব্ব-ময়মনসিংহ হইতে সংগ্ৰহ করিয়াছি। কি কারণে এই সকল গাথা ঐ প্রদেশে রক্ষিত হইয়াছে, তাহার একটু আলোচনা করিব। আমি যে-সময়ের কথা বলিব, তখনকার বাঙ্গালীর পূর্ববঙ্গের বর্তমান হিন্দু ও মুসলমানদের পূর্বপুরুষ । এই সাহিত্যের আলোচনা করিবার পূৰ্ব্বে আমরা এতৎসংশ্লিষ্ট ইতিহাসের একটি পৃষ্ঠা সম্বন্ধে কয়েকটি কথা বলিব ।
পাতা:প্রাচীন বাঙ্গলা সাহিত্যে মুসলমানের অবদান.djvu/৯৩
অবয়ব